• মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন

আল্লাহর মাসে আমাদের করনিয়

মোঃ আবু সাঈদ, অধ্যক্ষ, আল-জামিয়াতুস সিদ্দিকীয়া
Update : রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪
মোঃ আবু সাঈদ, অধ্যক্ষ,আল-জামিয়াতুস সিদ্দিকীয়া
মোঃ আবু সাঈদ, অধ্যক্ষ,আল-জামিয়াতুস সিদ্দিকীয়া

“আকাশ মন্ডলি ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহ তায়ালার বিধানে মাসের সংখ্যা বারোটি নির্ধারিত রয়েছে আল্লাহ তায়ালার কিতাবে”। (সূরা ফুরকান:৬২) প্রাক ইসলামি যুগে আরবদের মাধ্যে আরবি বারো মাস প্রচলিত ছিল। যদিও তাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের হিসাব ও গণণারীতির ব্যবহার। ইসলামের ২য় খলিফা হযরত উমর রাদি আল্লাহু তায়ালা আনহু এর সময় হিজরী সন গণণার প্রাতিষ্ঠানিক সূচণা হয় কিন্তু রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় এই হিজরী মাস সূমহকে কেন্দ্র করে নানাবিধ আমল চালু ছিল। হিজরী সনের প্রথম মাসের নাম হল মহররম মাস। যে মাস কে রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীবাসির নিকট আল্লাহর মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,“আল্লাহর মাস হলো মুহাররম মাস”। (সহীহ মুসলিম-১১৬৩, হাদীসটি সহীহ)আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ূতী রাহি. বলেন, জাহেলী যুগে মহররম মাসের নাম ছিল ‘সফরুল আওয়াল’। ইসলাম আসার পর আল্লাহ তায়ালা নিজে এই মাসের নাম মহররম রাখেন। (শরহুস সুয়ূতী আলা মুসলিম-৩/২৫২)

মহররম মাসের মৌলিক চারটি আমলের কথা নিচে উল্লেখ করা হল-
১) মুহাররম মাস ও নতুন বছরের শুরুতে দোয়া পড়া:মুহাররম মাসের চাঁদ দেখে দোয়া পড়া একটি বিশেষ সুন্নাত আমল। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,“হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য চাঁদটিকে নিরাপদ, ঈমান, নিরাপত্তা ও শন্তির বাহন করে ইদিত করো। হে নতুন চাঁদ! আল্লাহ তায়ালা আমারো প্রভু তোমারো প্রভু”।(সুনান তিরমিযী-৩৪৫১, হাদীসটি সহীহ)
২) তাওবা-ইস্তেগফার করা: মুহাররম মাসের অন্যতম একটি আমল তাওবা-ইস্তেগফার করা। আল্লাহ তায়ালার নিকট অতীত গুনাহ্ থেকে মাফ নিয়ে নেওয়া। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,“তুমি যদি রমদ্বানের পর আরো কোন মাসে রোযা রাখতে চাও তাহলে মুহাররমের রোযা রাখ। কেননা সেটি আল্লাহর মাস। তাতে এমন একটি দিন আছে, যেদিনে আল্লাহ তায়ালা অনেক মানুষের তাওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও সেদিন আরো মানুষের তাওবা কবুল করবেন।(সুনান তিরমিযী-৭৫১, হাদীসটি সহীহ)
৩) রোযা রাখা: মহররম মাসে বেশি বেশি রোযা রাখা। কেননা রমদ্বানের রোযার পর এ মাসের রোযা আল্লাহর নিকট অধিক উত্তম। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,“ রমাদ্বনের পর সবচেয়ে উত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সবচেয়ে উত্তম নামায হল রাতের নামায (অর্থাৎ, তাহাজ্জুদের নামায)”।(সহীহ মুসলিম-১১৬৩, হাদীসটি সহীহ)
৪) গুনাহ্ বর্জন করা: এ মাসে বিশেষ করে নিজেকে গুনাহ্ মুক্ত রাখা। এ মাসে গুনাহে লিপ্ত হয়ে নিজের প্রতি জুলুম করা থেকে আল্লাহ তায়ালা নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “অতএব, এ সকল মাসে তোমরা নিজেদের উপর জুলুম করো না ”।(সূরা তাওবা-৩৬) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম তবারী রাহি. বলেন, “এসব সময়ে তোমরা নিজেদের উপর জুলুম করোনা, একথার অর্থ হলো, এ সময়ে তোমরা আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ো না। আল্লাহর নিষিদ্ধ কোন কাজ করে ফেলো না। অন্যথায়, এ কারনে তোমরা আল্লাহর ক্রোধ ও শাস্তির সম্মুখীন হবে”।(তাফসীরে ত্ববারী-১৪/২৩৭)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category