• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৮:১২ অপরাহ্ন

মিয়ানমারে বাড়ছে সেনা-বিদ্রোহী সংঘাত, ভারতে পালাচ্ছে হাজারো মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩
মিয়ানমারে বাড়ছে সেনা-বিদ্রোহী সংঘাত, ভারতে পালাচ্ছে হাজারো মানুষ
মিয়ানমারে বাড়ছে সেনা-বিদ্রোহী সংঘাত, ভারতে পালাচ্ছে হাজারো মানুষ

মিয়ানমারে জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহীরা সোমবার একটি নিরাপত্তা ফাঁড়িতে আক্রমণ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা, বিদ্রোহী ও এক কর্মকর্তার বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। এর ফলে জান্তাবিরোধী চলমান সংঘাত আরও দুটি নতুন রণক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়লো। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার আশায় প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

রাখাইন রাজ্যের বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা বলেছেন, রাথেডাউং ও মিনবিয়া এলাকায় দুটি ফাঁড়ির দখল নিয়েছে তাদের যোদ্ধারা। তিনি বলেন, আমরা কয়েকটি ফাঁড়ি দখল করেছি। অন্যত্র লড়াই চলছে।

রাথেডাউংয়ের একজন বাসিন্দা বলেছেন, সোমবার ভোরে গুলির শব্দ শোনা গেছে। পরে কয়েক ঘণ্টা গোলাবর্ষণ করা হয়। সামরিক বাহিনী ওই এলাকায় প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয় এবং প্রশাসনিক ভবনগুলোতে তাদের শক্তি বাড়াতে দেখা গেছে।

ভারত সীমান্তবর্তী চিন রাজ্যেও সংঘাত শুরু হয়েছে। এখানে বিদ্রোহীরা দুটি সামরিক ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন একজন ভারতীয় কর্মকর্তা এবং হামলার বিষয়ে অবগত দুটি সূত্র।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা জান্তা এসব হামলায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অক্টোবরের শেষ দিকে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই সমন্বিত হামলা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তারা কয়েকটি শহর ও সামরিক ফাঁড়ি দখল করেছে।

জান্তা মনোনীত প্রেসিডেন্ট গত সপ্তাহে বলেছিলেন, বিদ্রোহীদের ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় মিয়ানমার ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সেনাবাহিনীর দাবি, তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী জেলার এক ডেপুটি কমিশনার জেমস লালরিঞ্চানা বলেছেন, প্রায় ৫ হাজার মানুষ ভারতের মিজোরামে প্রবেশ করেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের আশায়।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত চিন রাজ্য মোটামুটি শান্ত ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। সাম্প্রতিক সংঘাতের বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মুখপাত্রের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন হামলা জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা। এমনিতেই দেশটির সেনাবাহিনী বিভিন্ন দায়িত্বে লিপ্ত, যা তাদের শক্তি ও সামর্থ্যের তুলনায় বেশি।

২৭ অক্টোবর শান রাজ্যে সমন্বিত জান্তাবিরোধী হামলা শুরু হয়। চীন সীমান্তবর্তী ওই রাজ্যের একাধিক শহর ও শতাধিক সামরিক ফাঁড়ির দখল নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা।

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া শনিবার কায়াহ রাজ্যে একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে বিদ্রোহীরা। যদিও সেনাবাহিনী বলছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

ক্রাইসিস গ্রুপ থিংকট্যাংকের মিয়ানমার-বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সে বলেছেন, রাখাইনে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে সেনাবাহিনীর। কিন্তু শত্রুবাহিনী একাধিক এলাকায় হামলা চালানোর ফলে সেনারা জটিলতায় পড়তে পারে।

তিনি বলেন, যদি লড়াই আরও বেড়ে যায় তাহলে শাসকদের একযোগে সব রণক্ষেত্রে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category