• শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে গণ ডাকাতি ॥ ডাকাতের অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত বাস চালক মেহেরপুরে পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় চাঁদাবাজি মামলায় মুজিবনগরে ছাত্রলীগ নেতাসহ পাঁচ জন গ্রেফতার দুই দিনে ১৭ রোগী শনাক্ত গাংনীতে ডেঙ্গু আতঙ্ক গাংনীতে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে ক্লাস বর্জন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ শেখ মুজিব ও তার কন্যা হাসিনা মানেই দুঃশাসন: জাভেদ মাসুদ মিল্টন গাংনীতে পঞ্চাশোর্ধ নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের গাংনীতে আগ্নেয়াস্ত্র ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই র‌্যাবের গ্যাড়াকলে গাংনীতে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস পালন মেহেরপুরে ভ‍্যান চালকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল

হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই

এম আর আকাশ
Update : মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০২২

মেহেরপুরের গ্রাম গঞ্জে এক সময় সোনালী ও সবুজ রঙ্গের বাবুই পাখির কিচির মিচির ডাক শোনা যেত।

চমৎকার শৈল্পিক সূরে মানুষের ঘুম ভাঙ্গানো এ পাখিটি এখন বিলুপ্ত প্রায়।

গ্রাম গঞ্জের তাল, নারকেল ও খেজুর গাছ বিলুপ্ত হওয়ায় বাসা বাধতে না পারায় বংশ বিস্তার করতে পারছে না এ পাখি। ফলে দেখা যায়না বাবুই পাখির সুদর্শন বাসা।

একসময় মেহেরপুরে তিন প্রজাতির বাবুই পাখি দেখা যেত। দেশি বাবুই, দাগি বাবুই ও বাংলা বাবুই।

তবে বাংলা ও দাগি বাবুই এখন বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে দেশি বাবুই বেশি দেখা যায়।

এরা খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে দলবেঁধে বাসা বাঁধে।

বাবুই পাখির বাসা অত্যন্ত সুনিপুণ। শুরুতে বাসায় দুটি নিম্নমুখি গর্ত রাখে। অর্ধেক বাসা বাধার পর তার সঙ্গীকে খোঁজে।

স্ত্রী বাবুইটির পছন্দ হলে মাত্র চার দিনে বাসা বাঁধার কাজ শেষ করে। বাসার নিম্নমুখি একটি গর্ত বন্ধ করে ডিম রাখার জায়গা করে নেয়। অন্যটি খোলা রেখে দেয় প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য।

বাসার ভিতরে বাইরে কাদা লাগিয়ে রাখায় প্রবল ঝড় বা বাতাসেও টিকে থাকে তাদের বাসা। রাতে বাসা আলোকিত করার জন্য জোনাকী পোকা ধরে এনে বাসায় রাখে।

স্ত্রী বাবুইকে নিজের প্রতি আকর্ষণ করাতে খাল-বিল ও ডোবায় গোসল সেরে ফুর্তিতে নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে।

একটি পুরুষ পাখির একাধিক বাসা ও পরিবার থাকতে পারে। স্ত্রী বাবুই পাখি দুই থেকে চারটি ডিম দেয়। এরা মূলত বীজভোজী পাখি।

এরা খুঁটে খুঁটে বিভিন্ন ধরনের বীজ, পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু-রেণু ইত্যাদি খেয়ে জীবনধারণ করে। কৃষকরা ক্ষেতে ও বীজতলায় কীটনাশক ব্যবহার করায় বাবুই পাখি মারা যায়।

গাংনী থানা পাড়ার গৃহবধু আমেনা খাতুন জানান, বছর ত্রিশেক আগেও গ্রামাঞ্চলে বাবুই পাখি দেখা যেতো। পাখির ডাক বেশ ভাল লাগতো।

নারকেল ও তালগাছে ঝুলে থাকতো বাবুই পাখির বাসা। এখন আর দেখা যায় না।

রাইপুর গ্রামের মকলেছ জানান, বাবুই পাখি উঁচু গাছে বাসা বাঁধে। এখন তাল নারকেল গাছ নেই তাই বাবুই পাখি বাসা বাধতে পারে না। আগামীতে ছেলে মেয়েরা কেউ বাবুই নামের কোন পাখি আছে বলে বিশ্বাস করবে না।

গাংনী মহিলা কলেজ জীব বিজ্ঞান বিভাগ প্রফেসর রিনা আকতার জানান, যেহেতু বাবুই পাখি সাধারণত খুঁটে খুঁটে বিভিন্ন ধরনের বীজ, ধান, ভাত, পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু-রেণু ইত্যাদি খেয়ে জীবনধারণ করে।

এখন কৃষকরা ক্ষেতে ও বীজতলায় কীটনাশক ব্যবহার করায় বাবুই পাখি মারা যায়। বংশ রক্ষার্থে তারা এলাকা ত্যাগ করেছে।

প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা বাবুই পাখি বংশ বিস্তার লক্ষে তাল খেজুর ও নারকেল গাছ রোপনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category