সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে এক কিশোরীও রয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল হোসেন ও পঞ্চক্রোশি ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার পঞ্চক্রোশি ইউনিয়নের মাটিকোড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এবং আহতরা সবাই কৃষি শ্রমিক। নিহতরা হলেন, উপজেলার শিপপুর গ্রামের মোবাখর (৪০), মোন্নাফ হোসেন (১৮), শমসের আলী (৬০), আফসার হোসেন (৬৩), শাহিন আলী (২১) এবং মাটিকোড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস (৬০), শাহ আলম (৪২) ও রিতু খাতুন (১৪)।
বাকি একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতদের উদ্ধার করে উল্লাপাড়া ৩০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে হঠাৎ করেই মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে আকাশ। চলে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, সঙ্গে মেঘের গর্জন।
এর মাঝেই উল্লাপাড়া মাটি খোড়া গ্রামে কৃষি জমি থেকে চারা সংগ্রহ করছিলেন ১০ কৃষকসহ ২ নারী-শিশু। বৃষ্টির তীব্রতা বাড়লে সকলে আশ্রয় নেয় পাশের খোলা শ্যালো মেশিন ঘরে।
আর তখনই বিকট শব্দে বর্জ্র্যপাত পড়ে মেশিন ঘরের পাশেই। আর এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ৫ জন।
পরিবেশ স্বাভাবিক হলে গ্রামবাসী উদ্ধার করে আহতদের। আর ফোন করে ৯৯৯।
খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌছে উদ্ধার করে ৫টি মরদেহ। আহতদের স্থানীয় গ্রামবাসী উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
শিবপুর গ্রামের একই পরিবারের ৫জন নিহত হয়েছে। তাদের এক স্বজন জানান, একই পরিবারের ৫ জন মাটিকোড়া গ্রাম থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করতে এক সাথেই এসেছিলেন। এখান থেকে চারা বীজ নিয়ে নিজ জমিতে চাষ করতেন তারা। কিন্তু তার আগেই তাদের মরদেহ তাদের বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: ফিরোজ জানান, মেঘের গর্জনে তারাও ভীত হয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সিদ্ধান্ত হয়েছে, বজ্রপাত থেকে বাঁচতে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতার বৃদ্ধির জন্য প্রোগামও করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেলো অনেক বড় ঘটনা।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুতই তারা ঘটনাস্থলে পৌছান এবং মৃত অবস্থায় খোলা মাঠ থেকে নিহত ৫ জনকে উদ্ধার করেছেন। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: উজ্জল হোসেন জানান, হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি। এ সময় তিনি স্থানীয়দের বলেন, বজ্রপাত থেকে রক্ষায় জনগনকে সচেতন হতে হবে। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে হতাহতদের আর্থিক সহায়তা দেয়া আম্বাস দেন তিনি
জেলায় ব্রজ্যপাতে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ব্রজ্যপাত থেকে বাঁচতে সচেতনতার পাশাপাশি সরকারী উদ্যোগে ব্রজ্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেবার দাবী জেলার মানুষের।