ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট প্রথমবারের মত নিজেরাই জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা উৎপাদন করেছে। তাদের বানানো এই টিকা শিগগিরই বাজারে আসবে বলে দেশটির সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বে নারীর ক্যান্সার ঝুঁকির তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কেবল ২০২০ সালেই এ ক্যান্সারের ৬ লাখ ৪ হাজার রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছর এ ক্যান্সারে ভুগে মারা যান তিন লাখ ৪২ হাজার নারী।
তাদের ৯০ শতাংশই ছিলেন স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশের বাসিন্দা।জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য ১৬ এবং ১৮ এই দুই ধরনের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসকে (এইচপিভি) দায়ী করা হয়; ৭০ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যান্সার এই দুই ভাইরাসের কারণেই হয়ে থাকে।
ভারতের বায়োটেকনলজি বিভাগ বলছে, সেখানে বানানো এই টিকা দুই ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধেই কার্যকর। একই সঙ্গে ৬ এবং ১১ ভাইরাসের বিরুদ্ধেও কাজ করবে এই টিকা।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মার্ক অ্যান্ড কো এবং ব্রিটিশ কোম্পানি জিএসকে পিএলসি এই ক্যান্সারের টিকা উৎপাদন করে আসছে। সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা বলেন, ভারতে উৎপাদিত এই টিকা জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আমাদের দেশের নারীদের মৃত্যু ঝুঁকি রোধে যথেষ্ট হবে।
আর কয়েক মাসের মধ্যেই ভারকের বাজারে এই টিকা পাওয়া যাবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, পরে রপ্তানিও করা হবে সেরাম ইনস্টিটিউটের এই টিকা। ভারতে এ টিকার দাম পড়বে ২০০ থেকে ৪০০ রুপি। দুই বছরের মধ্যে এ টিকার ২০০ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে সেরাম ইন্সটিটিউটের। ইনজেকশনের মাধ্যমে এই টিকা দিতে।
নয় থেকে ১৪ বছর বয়সীদের নিতে হবে দুই ডোজ টিকা। আর ১৫ থেকে ২৬ বছর বয়সী নারীদের বেলায় লাগবে তিন ডোজ। গত বছর স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি টিকা জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে।