কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বিদ্যুৎ চলে যায়। মাঝে মাঝে আসে বিদ্যুৎ থাকার চেয়ে লোডশেডিং হয় বেশি।
কাগজ-কলমে লোডশেডিং এর সময়সূচী ভাগ করা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়না জেলাতে।
কুষ্টিয়া সদরের বাসিন্দা বাবলু জানান, দুপুর ১২ টার দিকে লোডশেডিং হয়। ১ ঘণ্টা পর এসে আবার যায় ৩ টার দিকে। ঘণ্টা দুয়েক বিদ্যুৎ থাকার পর ৭ টার দিকে গিয়ে ১৫ মিনিট লোডশেডিং ছিল।
এরপর রাতে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। পরে রাত ২ টার দিকে আবার যায়। আবার সকালে সাড়ে ৯ টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। আসে ৯ টা ৫০ মিনিটে।
এ অবস্থার কথা জানান চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউরিয়া এলাকার বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নিয়ম তৈরির শুরুতেই গলদ দেখা দিয়েছে। গতকাল অনেকবার লোডশেডিং হয়েছে। আর যখন বিদ্যুৎ আসে প্রতিবার ১০-১৫ মিনিট করে বিদ্যুৎ থেকে আবার চলে যায়। এ অভিযোগ কুষ্টিয়ায় সব এলাকায়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন বিদ্যুতের কর্মকর্তা বলেন, কাগজ-কলমে সময়সূচি থাকলেও তা বাস্তবে মানা হচ্ছে না। কারণ জেলাতে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ না পাওয়াই সময়সূচি অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। সাম্প্রতিক চলা তাপদাহের মাঝে এমন লোডশেডিংয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছে কুষ্টিয়াবাসী।
এর মধ্যে অনেক এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত লোডশেডিং পোহাতে হয়েছে মানুষদের। শহরের ভেড়ামারা এলাকার আরিফুজ্জামান তার এলাকার মঙ্গলবারের লোডশেডিংয়ের ধারাপাত দেন। তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে লোডশেডিং হয়।
১ ঘণ্টা পর এসে আবার যায় ৩টার দিকে। ঘণ্টা দুয়েক বিদ্যুৎ থাকার পর ৭টার দিকে গিয়ে ১৫ মিনিট লোডশেডিং ছিল। এরপর একেবারে রাতে ১১টা থেকে ১২টা বিদ্যুৎ ছিল না। পরে রাত ২টার দিকে আবার যায়। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ার কারণে কখন বিদ্যুৎ আসে বলতে পারেননি তিনি।
তবে জানান প্রায়দিনই সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। আসে ৯ টা ৫০ মিনিটে। এলাকাভিত্তিক সময় সূচির বাইরেও লোডশেডিংয়ের ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
বিদ্যুতের সংকটে নাজেহাল কাটাইখানা মোড় এলাকার টেলিকম ও ফটোস্ট্যাট ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, সকাল থেকে অনেকবার লোডশেডিং হয়েছে। অথচ আমাদের এলাকায় এতবার লোডশেডিং হাওয়ার কথা ছিলোনা।
তারা আরো বলেন, এই লোডশেডিংয়ের কারণে আমার প্রচুর কাস্টমারকে ফেরত দিতে হয়েছে। লোডশেডিংয়ে আবাসিক জীবনের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব প্রকট হচ্ছে।
বাংলাদেশের বৃহত্তম চালকল কুষ্টিয়া খাজানগরের ব্যবসায়িকরা বলেন, এখন আমাদের অটো রাইস মিলে ধান ভাঙা চলছে। মিলে একবারে প্রায় ১ হাজার ৮০০ মণ ধান সেদ্ধ হয়।
এ সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো ধানের মান নষ্ট হয়ে যাবে। মানে চাল ভেঙে খুদ হয়। এ জন্য অবশ্য মিলে ব্যাকআপ হিসেবে জেনারেটর রাখা হয়। কিন্তু জেনারেটর যেভাবে চলছে, এতে আমাদের ব্যয় কোন পর্যায়ে যাবে তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।
কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এস. এম. নাসির উদ্দীন বলেন, আসলে আমরা যে বরাদ্দ পাচ্ছি সেই বরাদ্দে সব এলাকায় বিদ্যুৎ নিরবিচ্ছিন্ন রাখা সম্ভব হচ্ছে না।