• মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

মেহেরপুরে পঞ্চম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস

বিবর্তন প্রতিবেদক
Update : বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
মেহেরপুরে পঞ্চম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস
মেহেরপুরে পঞ্চম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস

মেহেরপুর সদর উপজেলার কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার তিনদিন আগেই ইংরেজি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ২৫ আগষ্ট রবিবার অনুষ্ঠিত ইংরেজি পরীক্ষা স্থগিত করেছে মেহেরপুর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের তীর প্রশ্নপত্র বিতরণ সমন্বয়ক কমিটির প্রধান রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম, কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষিকা শাহানাজ পারভিন ও সহকারি শিক্ষক প্রশ্ন কম্পোজকারী আজাহার আলীর বিরুদ্ধে। তবে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি তারা অস্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, কমিটির মাধ্যমে শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা প্রশ্ন তৈরী করে হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের কপি কমিটির কাছে জমা দেন। পরে প্রশ্নগুলো যাচাইবাছাই করে একটি ফাইনাল করা হয়। প্রশ্নের ফাইনাল কপিটি কম্পোজ করার জন্য শিক্ষক আজাহার আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজাহার আলীর কাজ সম্পন্ন হলে প্রশ্নপত্র কমিটি প্রধানের কাছে দেওয়া হয়। পরে কমিটির মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ডেকে প্রশ্নপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

গত ২৫ আগষ্টে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র গত ২২ আগষ্ট চাঁদবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হয়। এর তিনদিন আগে ইংরেজি পরীক্ষার হুবহু প্রশ্নপত্র ইংরেজি শিক্ষিকা শাহানাজ পারভীনের বইয়ের ভিতরে পাওয়া যায়। প্রশ্নপত্র তৈরীর পর ফাইনাল প্রশ্নটি কম্পোজার শিক্ষক আজাহার ও কমিটি প্রধান জাহিদুল ইসলামের কাছে থাকার কথা কিন্তু পরীক্ষার আগেই কিভাবে শাহানাজ পারভীনের বইয়ের মধ্যে পাওয়া গেলো এই প্রশ্ন এখন অন্যান্য শিক্ষকদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

শিক্ষকরা জানান, শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কোন সুযোগ নাই। যারা প্রশ্ন তৈরী করে তারাই এগুলো ফাঁস করছে। তারা বলেন, যে সমস্ত শিক্ষকরা কোচিং করায় তারা প্রশ্ন তৈরীকারীদের সাথে জোগসাজসে এই কাজগুলো করে থাকে। প্রেস থেকে বা প্রশ্ন বিতরণ কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ প্রশ্নগুলো শুধুমাত্র পরীক্ষার আগের দিন প্রতিটি স্কুলে দেওয়া হয়। যিনি প্রশ্নগুলো কম্পোজ করেছেন তিনিই এগুলো ফাঁসের সাথে জড়িত।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হক বলেন, আমার বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক শাহানাজ পারভিন ছুটিতে থাকায় আমি তার ক্লাসে যায়। ক্লাসে একটি বইয়ের মধ্যে আমি একটি ইংরেজি প্রশ্নপত্র পাই। প্রশ্ন নিয়ে আমার সন্দেহ হলে আমি এ.টি.ও জয়নুল স্যারকে বিষয়টি অবগত করি। তিনি আমাকে ২২ তারিখে ক্লাস্টার প্রশ্নের সাথে মিলিয়ে দেখতে বলেন। ২২ তারিখের প্রশ্নের সাথে শিক্ষিকার বই থেকে পাওয়া প্রশ্নের হুবুহু মিল পাওয়া যায়। তিনি বলেন, পরীক্ষার দু’তিন দিন আগেই যদি প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যায় তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীরা কি শিখবে।

এবিষয়ে প্রশ্ন বিতরণ সমন্বয়ক কমিটির প্রধান রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম দুটি প্রশ্নের হুবহু মিল রয়েছে এবং প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, প্রশ্নগুলো ক্লাস্টার ভিত্তিক হয়। এগুলো এ,টি,ও মহোদয়ের তত্বাবধানে হয়ে থাকে এবং তার অধীনেই এগুলো যাচাইবাছাই হয়। আমি শুধুমাত্র ওনার মৌখিক নির্দেশে বিতরণ করছি।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম জয়নুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার ইংরেজি বিষয়ের প্রশ্ন আগেই পাওয়া গেছে বলে জানতে পারি। ওই প্রশ্নের সাথে পরীক্ষার জন্য যে প্রশ্ন বিতরণ করা হয়েছে তা হুবহু একই কপি। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category