• মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫১ অপরাহ্ন

মেহেরপুরে তিন থানায় জমা পড়লো ৭৩টি আগ্নেয়াস্ত্র

বিবর্তন প্রতিবেদক
Update : বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
মেহেরপুরে তিন থানায় জমা পড়লো ৭৩টি আগ্নেয়াস্ত্র
মেহেরপুরে তিন থানায় জমা পড়লো ৭৩টি আগ্নেয়াস্ত্র-প্রতীকী ছবি

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারী থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত মেহেরপুর জেলায় লাইসেন্সকৃত ৯৩টি অস্ত্রের মধ্যে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) মধ্য রাত পর্যন্ত জমা পড়েছে ৭৩টি অস্ত্র। অস্ত্রধারীদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ।

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, সরকারি আদেশ প্রতিপালনে এসব আগ্নেয়াস্ত্র ও লাইসেন্স জমা নেওয়া হয় স্ব স্ব থানাগুলোতে। এ জেলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারী থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত লাইসেন্স নিয়েছেন ৯৩ জন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা ছাড়াও বিএনপি নেতা, সামরিক বাহিনীর সদস্য, আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংক এবং আমলারা রয়েছেন।

সরকারি আদেশে আগ্নেয়াস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দেওয়ার নির্দেশনার আলোকে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) মধ্য রাতে শেষ সময় পর্যন্ত ৭৩টি অস্ত্র ও লাইসেন্স তিনটি থানায় জমা পড়েছে। বাকি ২০টি অস্ত্র সামরিক-অসামরকি র্কমর্কতা ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অধীনে রয়েছে।

মেহেরপুর সদর উপজেলার মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিদায়ী জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং তার ভগ্নিপতি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ^াস, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীনের ছেলে তানভির আহম্মেদ খান রানা, মেহেরপুর জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সাবেক মেয়র মাহফিজুর রহমান রিটন, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস শুকুর ইমন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউর রহমান মুকুল অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন।

মুজিবনগর থানায় জমা দেওয়া হয়েছে ৬টি। এর মাধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু জমা দিয়েছেন ২৩ রাউন্ড গুলিসহ এনপিবি পিস্তল। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকা মিলু অস্ত্র জমা দিয়েছেন তার স্ত্রীর মাধ্যমে। এ থানায় জমা দেওয়া বাকি ৫টি সাবেক সেনা সদস্যর একটি শর্টগান এবং ৪টি দোনালা বন্দুক রয়েছে।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারী থেকে গত মাসের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গাংনী উপজেলায় অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয় ৩৬টি। যার সবগুলো লাইসেন্স ও অস্ত্র গতরাত পর্যন্ত থানায় জমা পড়েছে। অবশ্য এর মধ্যে দুই জন লাইন্সের বিপরিতে অস্ত্র ক্রয় করেননি। সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলামের ভাই আনারুল ইসলামের নামে ইস্যুকৃত শর্টগান ২০২২ সালে জব্দ করেছিল গাংনী থানা। এছাড়া আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুর্বালী ব্যাংক গাংনী শাখায় একটি শটগান এবং সেনাবাহিনীর একজন মেজর ও সার্জেন্টের নামে ইস্যুকৃত অস্ত্র সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক তাদের নিজ নিজ হেফাজতে রেখেছেন।

এ সময়ের মধ্যে অস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সাবেক এমপি ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন, সাবেক মেয়র ও যুবলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডার, আওয়ামী লীগ নেতা ও কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানার অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন। এছাড়াও গাংনী থানার তৎকালিন অফিসার ইনচার্জ হরেন্দ্র নাথ সরকার এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনের অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দেওয়া হয়েছে বলে গাংনী থানা সুত্র নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও লাইসেন্স যাদের নামে ইস্যু করা ছিল তাদের স্ব স্ব নামে সাধারণ ডায়েরীর (জিডি) মাধ্যমে তা থানার অস্ত্রাগারে জমা রাখা হয়েছে। লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category