মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রজিনা খাতুন ও মনিরুল ইসলাম নামের দুই জনের উপর হামলা ও জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার মৃত ইউনুচ আলী শেখের ছেলে আব্দুল লতিফ, আব্দুল লতিফের ছেলে আমির হাসান হিমেল ও মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে। গত রবিবার দুপুরে আমঝুপি উত্তর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় মেহেরপুর সদর থানায় অভিযুক্তরাসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দাখিল করেছে ভুক্তভূগী রজিনা খাতুন। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের সাথে দখলীয় জমি নিয়ে পূর্ব থেকে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জের ধরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মেহেরপুর আদালতে দেং-৪৯৫/২৪ মামলা করলে দখলীয় জমির উপর ১৪৫ ধারা জারি করে স্ব-অবস্থানে থাকার জন্য উভয়পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে। অভিযুক্তরা আদালতের আদেশ অমান্য করে রবিবার দুপুরে আব্দুল লতিফ, হিমেল ও মেহেদী গুন্ডা বাহিনী নিয়ে দখলীয় জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করে জোরপূর্বক বাড়ী নির্মাণ করার চেষ্টা করলে তাদের বাধা দিলে মেহেদী হাসানের নির্দেশে হিমেল রজিনাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারে এবং মাথার চুল ধরে মাটিতে টানাহেচড়া ও শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এসময় রজিনার দেবর মনিরুল ইসলাম চঞ্চল তাকে বাঁচাতে ছুটে এলে তাকেও মারধর করে গুরুত্বর আহত করে। এই ঘটনার দুটি ভিডিওতে হামলার সত্যতা পাওয়া যায়।
রজিনার স্বামী আব্দুল হালিম বলেন, এটা আমার পৈতিক সম্পত্তি। এই জায়গাটা একটি গর্ত ছিলো। সেটি আমি অনেক টাকা খরচ করে ভরাট করেছি। ২০০০ সালে আমি এখানে বাড়ির ভিত্তি স্থাপন করি। ২০০২ সালে আমার বাবা মারা যাবার পর আমরা ভাই-বোনেরা বসে বাড়ি ও মাঠের জমি ভাগ করি। ভাগ অনুযায়ী আমরা সকলে জমি বন্টন করেছি। সে অনুযায়ী দীর্ঘ বিশ বছর ধরে আমি এখানে বসবাস করছি। অন্য ভাই-বোনেরা সকলে তাদের জমি ভোগদখল করছে। এত বছর পর তারা এসে সেই বন্টননামা এখন না মেনে আমার বাড়ির সামনের সেই ভরাট করা জায়গাটি দখল করার চেষ্টা করছে। ওই স্থানে লাগানো গাছপালা কেটে তছরুপ করে জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছে। মেহেদী জেলা কারাগারের ডাক্তার। সেই প্রভাব খাটিয়ে সে বিভিন্ন অপরাধী ও নেতাকর্মীদের হাত করে এই জমি দখল নিতে চাচ্ছে।
আহত চঞ্চল বলেন, মূলত রাস্তার পাশের পজিশন নেওয়ার জন্যই তারা আমাদের উপর হামলা ও জমি দখলের চেষ্টা করছে। এত বছর তারা কিছু না বললেও ৫ আগষ্টের পর থেকে তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জমি নিয়ে তাদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় তারা কোনকিছু মানতে চাইনি। প্রথম থেকেই তারা মারমুখী অবস্থায় ছিলো। তারা আমার বড় ভাইয়ের মেয়ে হেলেনা ও তার ছেলেকে হিমেল মারধর করে। পরে তারা সকালে স্কেভেটর নিয়ে এসে জমি খননের চেষ্টা করে। এসময় আত্মীয়-স্বজনরা তাদের নিষেধ করলে সেসময় কাজ বন্ধ রাখলেও পরে দুপুর ২টার সময় এসে মাটি খনন করতে গেলে আমার ভাবী বাধা দিলে তাকে মারধর শুরু করে। এসময় আমি ভাবীকে রক্ষা করতে গেলে মেহেদী ও হিমেল আমাকেও মেরে আহত করে।
এ বিষয়ে মেহেদী হাসান জমির বিষয়ে কথা বললেও ঘটনা সম্পর্কে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।