• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন

নির্বাচন কমিশন যেনো সাজানো নির্বাচন করতে পায়তারা চালাচ্ছে-গোলাম মোহাম্মদ কাদের

বিবর্তন ডেস্ক
Update : বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যেনো সাজানো নির্বাচন করতে পায়তারা চালাচ্ছে। সংলাপে প্রায় সকল রাজনৈতিক দলগুলো ইভিএম-এর বিরোধীতা করেছে কিন্তু নির্বাচন কমিশন ইভিএম-এ ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, ইভিএম হচ্ছে কারচুপির মেশিন। আবার নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি বলছে, সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব নয়। তাই নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে তাতে অনেকেরই সন্দেহ আছে। মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন কোন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মাতামাতি করছে। অপরদিকে, দেশের মানুষ কথা বলতে পারছে না। কোন দাবীতে আন্দোলন হলে পুলিশ ও প্রতিপক্ষরা তাতে হামলা চালাচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে, এমন বাস্তবতায় নির্বাচন হলে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে না। যেখানে সরকারের ৯০ ভাগ প্রভাব রয়েছে, পুলিশ ও প্রশাসন সকারের হাতে, এমন বাস্তবতায় সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে খোলামেলা কথা বলেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোন সংকট নেই। কোন ভাঙনের মুখে পড়বে না জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রতিপক্ষ হিসেবে জাতীয় পার্টিকে বারবার ক্ষতি করতে চেয়েছে। যারা পার্টি ছেড়ে গেছে তারা কেউ শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। এভাবে কেউ চলে গেলেও জাতীয় পার্টি দূর্বল হবে না।

সাংবাদিকদের অপর এর প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, বেগম রওশন এরশাদ আমাদের অত্যান্ত শ্রদ্ধাভাজন। আমার অসুস্থতা বা দূর্ঘটনার সংবাদে তিনি বারবার ফোন করে খোঁজ খবর নিয়েছেন। তিনি বারবার বলেছেন, আমি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হতে চাই না। তিনি বারবার সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন ভালোভাবে চলছে। তিনি বলেন, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আমাদের তিনি পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা বা না করা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর এখতিয়ার। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বেগম রওশন এরশাদ এর সাথে যোগাযোগ করেছেন। শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মনে হয়েছে, তিনি কারো কথায় বা চাপে কাউন্সিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বাইরের কিছু মানুষ হয়তো, বেগম রওশন এরশাদ এর নাম ব্যবহার করে ভিন্ন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। যারা জাতীয় পার্টির কেউ না, কেউ হয়তো ছিলো অনেক আগে জাতীয় পার্টিতে আবার সুর্নিদিষ্ট অভিযোগে কাউকে কাউকে পার্টি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে, তারা বেগম রওশন এরশাদকে অপব্যাবহার করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আবার অসুস্থতার কারণে দীর্ঘ প্রায় এক বছর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে তিনি অবদান রাখতে পারছেন না। তাই পার্টির সংসদীয় দল জাতীয় পার্টির ঐক্য রক্ষা ও পার্টিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে বাঁচাতে বেগম রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতা না রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গেলো এক বছরে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল অসুস্থ বিরোধীদলীয় নেতার কর্মকান্ড নিয়ে ভাবেনি। এখন জাতীয় পার্টির স্বার্থেই বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল তাদের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে জানিয়েছেন। এখন বিধি অনুযায়ী স্পিকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

নির্বাচনী জোট গঠনের বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনের পূর্ব মুহুর্তে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে জোট গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, তখনকার বাস্তবতা ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার কথা বিবেচনা করে জোট গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি। তবে, এখন আমরা তিনশো আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলকে আরো শক্তিশালী করতে নিয়মিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলেও মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যার্থ হয়েছে। দুটি দলের রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শে অনেক ভিন্নতা আছে কিন্তু চরিত্রগত কোন অমিল নেই। আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে একই চিত্র দেখা যাবে। দুর্নীতি, টেন্ডাবাজী ও দলবাজী শুরু হবে। দেশের মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আসবে না। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তিকে এখন শত্রæ মনে করা হয়। এটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি হতে পারে না। আমরা চাই, সবাই যার যার রাজনীতি করবে, কিন্তু দেশ ও জাতীয় স্বার্থে সবাই এক হয়ে কাজ করবে। আমরা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই। তিনি বলেন, মেগা প্রকল্প চালু হচ্ছে একটিও সময়মত শেষ হচ্ছে না সময় বাড়াতে হচ্ছে, আবার ব্যায় বেড়ে যাচ্ছে কয়েক গুণ। একই সাথে যখন দেখা যায় শুধু সুইস ব্যাংকেই ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে তখন দুর্নীতির বিষয়ে আর কোন প্রশ্নের অবকাশ থাকে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সবচেয়ে বেশি দুর্ণীতি হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category