মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও ১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। গেল দুই মাস ধরে আশংকাজনকহারে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আসাবিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল আল মারুফ জানান, চলতি মাসের দুই দিনে ১৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গেল ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন রোগী। গেল সেপ্টেম্বর মাসে মোট ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১০০ জন।
এদিকে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরক্ষী-নিরীক্ষা গাংনী হাসপাতালেই হচ্ছে। তবে উপজেলা পর্যায়ের এই হাসপাতালটিতে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড না থাকায় অন্যান্য রোগীদের সাথেই রাখা হচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী থেকে ডেঙ্গু সংক্রমণ ঠেকাতে মানা হচ্ছে না মশারি ব্যবস্থাপনা। বেশিরভাগ রোগী মশারি ছাড়াই বেডে অবস্থান করছেন। এতে হাসপাতাল থেকেই ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারণ রোগীরা।
সাধারণ জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া ঝোড়পাড়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দোতালায় একই সাথে ডেঙ্গু রোগী ও সাধারণ রোগীদের বেড। এতে সাধারণ রোগীদের মনে আতংক বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আব্দুল আল মারুফ জানান, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড নেই। তাই ডেঙ্গু শনাক্ত রোগীদের মধ্যে যাদের শারীরিক অবস্থা ভাল তাদেরকে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। বাড়িতেই তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। অপরদিকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সব রোগীদের বার বার ডেঙ্গু সতর্কতা জানানো হচ্ছে। সচেতনতার মাধ্যমে ডেঙ্গু সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা না থাকায় শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া গত দুই মাসে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলায় ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং একটি পৌরসভা রয়েছে। স্থানীয় সরকারের এসব প্রতিষ্ঠান মূলত ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং কোন কোন সময় ফগার মেশিন দিয়ে এডিসের লাভা ধ্বংসের কাজ করে থাকে। তবে এবারের চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তেমন কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে ডেঙ্গু সচেতনা সৃষ্টি ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বৃষ্টির কারনে কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আরও কার্যকরীভাবে বিষয়টি দেখা হবে বলে জানান তিনি।