পিতার স্থাবর অস্থাবর সম্পদ লিখে নিয়ে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তার সন্তানেরা। অবশেষে ঠাঁই মিলেছে হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনীর নওপাড়া গ্রামে। ভুক্তভোগি ওই বৃদ্ধর নাম আব্দুল হামিদ ওরফে তুফান।
বৃদ্ধ তুফান জানান, তিনি ছিলেন ৩৮ বিঘা সম্পত্তির মালিক। ১৩ বিঘা জমি নিজের নামে রেখে সব জমিজমা সন্তানদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। সন্তানেরা পৃথক পৃথক সংসারে বসবাস করেন। স্ত্রী সোনাভানুকে নিয়ে বেশ ভালই চলছিল দিনপাত। নিজের নামের জমি বর্গা দিয়ে যা পান তা দিয়ে সংসার চলে যেতো। স্ত্রী মারা যাবার পর সন্তানদের কাছে পালাক্রমে থাকতেন তিনি। কিন্ত বিপত্তি ঘটে করোনাকালীণ সময়ে।
তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে চার ছেলে রউফ, পাঞ্জাব, শাহীন ও রাহিন মিলে অচৈতন্য অবস্থায় পিতার হাতের টিপসহি নিয়ে সব জমিজমা রেজিস্ট্রি করে নেয়। শুরু হয় বাবার প্রতি অবজ্ঞা আর অবহেলা। কারণে অকারণে নির্যাতন সইতে হতো তাকে। গত ৪ সেপ্টেম্বর সকালে ওষুধ ও পোশাক কেনার জন্য টাকা চাইলে চার ছেলে ও ছেলের স্ত্রীরা তাকে লাঞ্ছিত করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। কোথাও ঠাঁই না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অদ্যাবদি সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি।
কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বৃদ্ধ তুফান জানান, তিনি বাড়ি থেকে বিতাড়িত হবার পর গাংনী থানায় যোগাযোগ করলেও কোন কাজ হয়নি। একজন অফিসার বাড়িতে গিয়ে ছেলেদের সাথে কথা বলে চলে আসেন। তার পর আর কেউ কোন খোঁজ নেন নি। তিনি জানান, সন্তানেরা পিতা মাতার কাছে একেকটি বৃক্ষ। ফল না দিলেও ছায়া অথবা দামী আসবাব পত্রের কাঠ দিবে। কিন্তু কে জানে তার সন্তানেরা হবে একেকটি বিষ বৃক্ষ ? কোথায় গেলে তিনি সুবিচার পাবেন? এমন প্রশ্ন তার চোখে মুখে।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, ওই বৃদ্ধ থানায় এসে অভিযোগ করার পর একজন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি পারিবারিক তাই সন্তানদের সাথে বিবাদ মিটিয়ে দেওয়া হয়। পরের ঘটনাটি তিনি জানেন না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।