• মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৩ অপরাহ্ন

গাংনীতে প্রতিবন্ধী যুবতী ধর্ষনের শিকার ॥ ধর্ষিতার বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ!

বির্বতন প্রতিবেদক
Update : শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
রেপ
গাংনীতে প্রতিবন্ধী যুবতী ধর্ষিত

মেহেরপুরের গাংনীতে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক যুবতীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে তারই চাচাতো ভাই। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপন করলেও একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় প্রতিবন্ধী যুবতীকে মামলা করতে বাধা প্রধান করছে অভিযুক্ত ধর্ষক মনিরুল ইসলাম।

ধর্ষণের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে ভুক্তভোগীর পরিবারের নামে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মনিরুল। বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষের মাঝে তীব্র সমালোচনা চলছে। তবে গাংনী থানা পুলিশ বলছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ধর্ষনের শিকার ওই প্রতিবন্ধী নারী সাংবাদিকদের জানান, গত ৩০ আগস্ট শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবতীর মা চিকিৎসা নিতে রাজশাহীতে ছিলেন। কাজের উদ্দেশ্যে বাবা ছিলেন বাড়ির বাইরে। আর এই সুযোগে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই মনিরুল ইসলাম তার বাড়িতে যায়। যুবতীকে একলা পেয়ে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ির একটি রুমে যায়। সেখানে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মনিরুল।

প্রতিবন্ধীর চিৎকারে ছোট ভাই এগিয়ে গিয়ে বিষয়টি লক্ষ্য করেন। তখন সে মনিরুলের দিকে তেড়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত ধর্ষক মনিরুল ইসলাম। এদিকে ধর্ষণের বিচার চাইতে ওই দিন মনিরুলের বাড়িতে যায় প্রতিবন্ধী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এতে মনিরুলের স্ত্রী রোজিফা খাতুন, তার  মেয়ে আয়েশা খাতুন ওরফে মুন্নী এবং জামাতা শান্ত মারপিট করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

এব্যাপারে স্থানীয় ভবানিপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ জহির রায়হান জানান, ঘটনাটি ভবানীপুর ক্যাম্পের অদূরের ঘটনা।  ৯৯৯ ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটির স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এবং মেয়েটিকে মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

প্রতিবন্ধীর পরিবারিক সুত্রে জানা গেছে, জন্মগতভাবেই সে প্রতিবন্ধী। নিজে হাঁটতে পারে না। কেউ যদি তাকে তুলে দাঁড় করিয়ে দেয় তাহলে কিছুক্ষণ হাঁটতে পারে। বসার পরে নিজে আর উঠে দাঁড়াতে পারে না। ফলে সারাক্ষণ তাকে বাড়িতেই থাকতে হয়। পরিবার তাকে নিয়ে বিপাকে থাকলেও মধ্য বয়সী মনিরুলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তার উপর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামেবাসি জানান, মনিরুল খুবই চতুর ও প্রভাবশালী। সে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় নানাভাবে পায়তারা চালাচ্ছে। তাছাড়া ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা না করতে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে থানায় একটি চাঁদাবাজির অভিযোগও করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে গ্রামের একটি পক্ষ বিষয়টি সালিশে মিমংসার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। অভিযুক্ত ধর্ষক মনিরুল ইসলামকে রক্ষা করতেই নানাভাবে প্রতিবন্ধী পরিবারকে টাকার প্রলোভন ও হুমকি দিচ্ছে তারা। ফলে ওই প্রতিবন্ধী ও তার পরিবারের লোকজন মামলা করতে থানা পর্যন্ত আসতে পারছে না। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে অসহায় এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন গ্রামের অনেকে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মনিরুল ইসলাম জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে ওই প্রতিবন্ধী পরিবারটি মিথ্যা অভিযোগ করছে। মামলা করার হুমকী দিচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এব্যাপারে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ধর্ষনের বিষয়টি খোঁজ নেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত কারো কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category