• বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:০৮ অপরাহ্ন

উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ ও মামলা করে হয়রানির অভিযোগ

বিবর্তন প্রতিবেদক
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩
উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ ও মামলা করে হয়রানির অভিযোগ
উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ ও মামলা করে হয়রানির অভিযোগ

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের খোকসা গ্রামের আজগর আলী ও মনজুর ইসলাম নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ ও হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ফুষে উঠেছেন এলাকাবাসী। নিজের জমি চাষ উপযোগী করতে গিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে রীতিমতো মাটি খেকোর খেতাব নিতে হয়েছে জমি মালিক আজগর আলি ও ব্যবসায়ী মনজুর ইসলামকে।

এঘটনায় গত ১৯ জুলাই স্থানীয় একটি পত্রিকায় “মেহেরপুরের খোকসাতে সরকারি জমিতে মাটি কাটার অভিযোগ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে বলা হয় খোকসা গ্রামের তাসিরুল ইসলামের বাড়ির পাশে মাঠে যাওয়া রাস্তার মাটি রাতের আধারে কেটে সাবাড় করে দিচ্ছেন। যেখান থেকে মাটি কাটছে সেখানে একটি রাস্তা ছিল, সে রাস্তা দিয়ে মাঠের ফসল নিয়ে যাতায়াত করতো কৃষকগণ।

সংবাদে সাদিকুল নামের একজন অভিযোগ করে বলেছেন, মনঞ্জুরুল রাতের আধারে সরকারের জমিতে মাটি কাটছে। জমির পাশে আমার জমি ছিলো। সে আমার জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে দেয় অন্য জায়গায়। এঘটনায় সাদিকুর রহমান ওরফে ফকির বাদী হয়ে ৪৪৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬ পিসি ধারায় একটি মামলা করেছেন। যার মামলা নং সিআর ৫১৬/২০২৩ইং।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে বাদির কেনার জন্য বায়নাকৃত জমিতে মঞ্জুরুল ইসলাম অবৈধভাবে প্রবেশ করে এসকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে একই সাথে সরকারি জমির মাটি কেটে প্রায় ৩০০ ট্রলি মাটি বিক্রি করেছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায় উপরোক্ত সংবাদের কোন তথ্য ও মামলার বিবরণের সাথে কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। যে জায়গা থেকে মাটি কাটার কথা বলা হয়েছে সেটি সমতল করতে সেখান থেকে পিকেট ইঠ ও রাবিশ সরানো হয়েছে। এছাড়া সাদিকুলের জমি থেকে সামান্য পরিমান মাটিও কাটা হয়নি। জমিটি চাষ উপযোগী করতে শুধুমাত্র রাবিশ ও পিকেটগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সংবাদে এধরণের উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়ায় অবাক হয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বলেন, একজনের মিথ্যা তথ্য কোন যাচাইবাছাই না করেই এমন উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ দায়িত্বহীনতার পরিচয়। সংবাদটি প্রকাশ করার আগে জায়গাটি পরিদর্শন করে ঘটনাটি যে মিথ্যা ও বানোয়াট তা নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিলো।

পাশের জমির মালিক স্থানীয় হায়াত আলী বলেন, এই জমি আজগরের। আমি জন্ম থেকে দেখে আসছি আজগর আলী এই জমি চাষ করে আসছেন। জমিটি সমতল ছিলো। এখানে ভাটার কাজে ব্যবহারের জন্য জমিটি রাবিশ ও পিকেট ইট দিয়ে সড়ক বরাবর উচু করা হয়। এখন আর ভাটা নেই। তাই জমিটি সমতল করার জন্য মাত্র ১২ ট্রলি রাবিশ ও পিকেটগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই জমি থেকে কোন প্রকার মাটি কাটা হয়নি। যেহেতু এই জমির পিছনে আমার জমি তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি দাড়িয়ে ছিলাম।

খোকসা গ্রামে বসবাসকারী সাকেম আলী বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর আমি খোকসা গ্রামে বসবাস করছি। সেই থেকেই দেখে আসছি এই জমি আজগর আলী চাষ আবাদ করছেন।

এবিষয়ে জমির মালিক আজগর আলি জানান দীর্ঘ ৬০ বছর যাবত আমি এই জমির চাষ আবাদ করে আসছি। দুই এক বছর আগে জমির পাশে ইট ভাটা থাকায় ভাটা মলিকরা আমার জমির এই অংশতে পিকেট ইঠ ও রাবিশ রাখতেন। তবে এখন ভাটা বন্ধ হয়ে গেছে যে কারনে আমার জমিতে পড়ে থাকা পিকেট ইট ও রাবিশের স্তুপ সরিয়ে জমিটিকে চাষ উপযোগী করেছি। গত ১৭ জুলাই একটি ফেসবুক পেইজ থেকে সরকারী জমির মাটি চুরি করে কেটে বিক্রয় , এবং অন্যজনের জমির উপর মাটি কেটে বিক্রয় শিরোনামে একটি লাইভ ভিডিও প্রকাশ করা হয়। এর দুইদিন পর স্থানীয় পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি নিউজ প্রকাশ করা হয়।

এবিষয়ে মনজুর বলেন আমার স্কেভেটর ও গাড়ির ব্যবসা রয়েছে। সেই সূত্রে জমির মালিক আমাকে তার ওই জমি থেকে ইটের খোয়া ও রাবিশ অপসারণের জন্য বলেন। সে অনুযায়ী আমি সেখানে গাড়ি পাঠিয়ে দিই। এই ঘটনার সাথে আমি সরাসরি যুক্ত না থাকা সত্তেও এ নিয়ে এমন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ ও হয়রানিমূলক মামলার মাধ্যমে সমাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা ছিল তাদের পূর্বপরিকল্পনা। আমি এই ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুবিচার দাবি করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category