লিবিয়ার মানব পাচারের অপরাধে মাসুদ রানা নামের এক আদম ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন মেহেরপুর মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুাল। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুালের বিজ্ঞ বিচারক মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ তহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এটিই হচ্ছে প্রথম রায়।
এদিকে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে রয়েছে দন্ডিত মাসুদ রানা। রায়ে কারাদন্ডের পাশাপাশি ১৪ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। মেহেরপুর জেলায় মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুনালের এটি প্রথম রায়।
যা বিদেশে টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে মানব পাচাররোধে কার্যকরী ভুমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠ আইনজীবি ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। দন্ডিত আদম ব্যাপারী মাসুদ রানা যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী নতুন বাজারের নজরুল ইসলামের ছেলে।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের আকবর আলী মীরের ছেলে সইবুর রহমানকে লিবিয়ায় ভাল বেতনে কাজের লোভ দেখায় দ-িত মাসুদ রানাসহ তার সঙ্গীয় কয়েকজন কথিত দালাল। ছেলে ও পরিবারের উন্নত ভবিষ্যত চিন্তা করে নজরুল ইসলাম ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা দেয় মাসুদ রানাকে।
২০১৪ সালের ১ জুলাই সইবুরকে তার বাড়ি থেকে লিবিয়ায় পাঠানোর উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যায় মাসুদ রানা। এর পর থেকেই ছেলের সাথে আর কোন যোগাযোগ করতে পারেনি আকবর আলী মীর। নানাভাবে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এবং মাসুদ রানার কাছ থেকে কোন সদুত্তোর না পেয়ে ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মেহেরপুর মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা আর্জি করেন আকবর আলী। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মুজিবনগর থানাকে মামলা দায়ের পূর্বক তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, পুলিশের তদন্তে উঠে আসে মাসুদ রানার মানব পাচার চক্রের সম্পৃক্ততা। লিবিয়ার পাচারের কিছুদিন পর মারা যায় সইবুর। অবৈধভাবে লিবিয়ায় পাঠানোর কারণে তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনাও সম্ভব হয়না।
বিজ্ঞ আদালতে মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে মাসুদ রানা দোষী হিসেবে সাব্যস্ত হয়। মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এর ৬(২) ধারার অপরাধে মাসুদ রানাকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন বিজ্ঞ বিচারক।