• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৫০ অপরাহ্ন

ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শৈলকুপা পৌরবাসী

বিবর্তন প্রতিবেদক:
Update : রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শৈলকুপা পৌরবাসী
ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শৈলকুপা পৌরবাসী

ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য নির্ধারিত জায়গায় ফেলতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে শহরের নানা জায়গায় ময়লার স্তূপ জমে গেছে। ময়লার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আশরাফুল আজম। এই পৌরসভা ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসন এলাকায় অবস্থিত। মেয়র দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম ওরফে দুলালের পক্ষে ছিলেন। এখানে নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভার হাবিবপুর এলাকায় একটি পশুর হাট রয়েছে। এই হাট ও হাটের পাশের এলাকা সরকারি সম্পত্তি। হাটের পেছনে একটি ডোবা রয়েছে, সেটিও সরকারি জমি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে এই ডোবায় বর্জ্য ফেলে আসছিল। এখনো সেই স্থানে বর্জ্যেরে স্তূপ রয়েছে, যা মাঝেমধ্যে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়ে থাকে। আগে শৈলকুপা পৌর কার্যালয়ের পাশে একটি গর্তে ময়লা–আবর্জনা ফেলা হতো। তিন বছর ধরে হাবিবপুর গবাদিপশুর হাটের পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাবিবপুর এলাকায় ডোবা রয়েছে। এর পেছনে কিছুটা অংশে পানি জমে আছে, সামনের দিকে ময়লার স্তূপ। এলাকার লোকজন জানান, ওই পানিতে সেজান শেখ মাছ চাষ করছেন। জায়গাটি ঝোপজঙ্গলে ভরা।

পৌরসভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম জানান, গত ৮ জানুয়ারি তাঁদের গাড়ি ওই স্থানে ময়লা ফেলতে গেলে প্রথমে বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ময়লাসহ গাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেন। পরদিন তাঁরা আবারও গাড়ি নিয়ে যান। তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে গাড়ি ফেরত পাঠানো হয়। এবার তিনি বিষয়টি পৌরসভার মেয়রকে অবহিত করেন। মেয়র নিজেও চেষ্টা করেছেন, কিন্তু বাধা দেওয়া মানুষগুলোর সঙ্গে সমাধান হয়নি। তাঁরা ফেলতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, ময়লা ফেলার বিকল্প জায়গা না থাকায় তারা পৌরসভা এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পারছেন না।

পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী মনোরঞ্জন মালাকার জানান, ময়লা ফেলার কোনো জায়গা না থাকায় তাঁদের কাজও বন্ধ রয়েছে। শহর ঝাড়ু দিয়ে ময়লা কোথায় রাখবেন, সেই চিন্তায় ঝাড়ু দেওয়াও বন্ধ করে রেখেছেন।

পৌর মেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, জায়গাটি সরকারি। সেখানে গর্ত (ডোবা) রয়েছে, যা ভরাট হলে হাটের জায়গাও বৃদ্ধি হবে। এ কারণে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই হাবিবপুর পশুর হাটের পেছনে তাঁরা বর্জ্য ফেলছিলেন। শুধু পরাজিত প্রার্থীর ভোট করায় হয়রানি করতে প্রতিপক্ষ পৌরসভার বর্জ্য ফেলতে বাধা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে ময়লা ফেলার জায়গার ব্যবস্থা করা কর্তৃপক্ষের জন্য সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ কর্মী সেজান শেখ বলেন, স্থানীয় রাজনীতিতে দুটি পক্ষ রয়েছে। আমি আগে মেয়রের পক্ষে ছিলাম। সেই সময় মেয়র ওই গর্তে মাছ চাষের মৌখিক অনুমতি দেন। এর জন্য তিনি কিছু টাকাও নেন। কিন্তু তাঁর পক্ষ ছেড়ে দেওয়ার পর সেই গর্তে ময়লা ফেলতে শুরু করেন। প্রায় এক বছর হলো তিনি এখানে ময়লা ফেলছেন।’ তিনি আরও বলেন, গর্তে তাঁর কিছু মাছ রয়েছে। ওই মাছ মারা যেতে পারে এই আশঙ্কায় সেই গর্তে ময়লা ফেলতে দিচ্ছেন না। পাশাপাশি এলাকার মানুষও চান না এখানে ময়লা ফেলে দুর্গন্ধ ছড়াক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category