• শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে গণ ডাকাতি ॥ ডাকাতের অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত বাস চালক মেহেরপুরে পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় চাঁদাবাজি মামলায় মুজিবনগরে ছাত্রলীগ নেতাসহ পাঁচ জন গ্রেফতার দুই দিনে ১৭ রোগী শনাক্ত গাংনীতে ডেঙ্গু আতঙ্ক গাংনীতে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে ক্লাস বর্জন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ শেখ মুজিব ও তার কন্যা হাসিনা মানেই দুঃশাসন: জাভেদ মাসুদ মিল্টন গাংনীতে পঞ্চাশোর্ধ নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের গাংনীতে আগ্নেয়াস্ত্র ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই র‌্যাবের গ্যাড়াকলে গাংনীতে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস পালন মেহেরপুরে ভ‍্যান চালকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল

বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদানে তথ্যমন্ত্রীকে চলচ্চিত্র সমিতিগুলোর ধন্যবাদ

বিবর্তন ডেস্ক
Update : বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান এবং সিনেমা শিল্প উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশের চলচ্চিত্র সমিতিগুলোর নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি, চিত্রগ্রাহক সংস্থা এবং চলচ্চিত্র সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ডের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে তাদের এ অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দুপুর দেড়টায় শুরু হওয়া এ বৈঠকে শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে ভগ্নদশা থেকে উত্তরণের পথে নেওয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যাকে এবং তারপর তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা এতো কমে গিয়েছিলো যে, আমি এবং আমরা শংকিত হয়ে পড়েছিলাম। স্রষ্টার কৃপায় এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও তথ্যমন্ত্রীর তৎপরতায় সিনেমা হলের সংখ্যাও আবার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মানুষ আবার হলমুখী হচ্ছে। বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদান দেওয়ার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এই উত্তরণে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। সেজন্য তথ্যমন্ত্রীর বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য।’

পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘যারা বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান দেয়া বন্ধের কথা বলেন, তারা কি চান না দেশের সিনেমা শিল্প বেঁচে থাকুক, মানুষ সিনেমা হলে যাক! তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্যিক সিনোমায় অনুদান দেওয়ায় যে চলচ্চিত্রে আবার প্রাণ এসেছে, তার প্রমাণ আমরা দেখতে পাচ্ছি। করোনার মধ্যে সিনেমার খরায় অনুদানই ছিল বৃষ্টি।’

প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘চলচ্চিত্রের কোন ক্যাটাগরিতে কখন কি পরিমাণ অনুদান দেওয়া প্রয়োজন সেটি দেশের ও সিনেমা শিল্পের উন্নতির কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। বাণিজ্যিক সিনেমা দেশের চলচ্চিত্রের প্রাণ, কোটি কোটি মানুষের বিনোদেন, আবেগ আর ভালোবাসার জায়গা। এতে অনুদান শুধু দেওয়া নয়, অনুদানের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করলে সিনোমা জগতের উন্নতি হবে।’

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ চলচ্চিত্র নেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের চলচ্চিত্র প্রতিকূলতার মধ্যেও ভালোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৫৭ সালে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প যাত্রা শুরুর পর বহু কালজয়ী ছবি যেমন জন্ম দিয়েছে, বহু কালজয়ী নায়ক-নায়িকারও জন্ম দিয়েছে এবং আমাদের অনেক ছবি স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে অবদান রেখেছে। বহু ছবি আন্তর্জাতিক অঙ্গণে পুরস্কৃত হয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের ছবি এখন শুধু আমাদের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, ইউরোপ-আমেরিকাসহ অনেক দেশে প্রদর্শিত হয়।’

‘একসময় অনুদানের অনেক সিনেমা হলে মুক্তি পেতো না, অনেকগুলো আর্ট ফিল্মের জন্য অনুদান দেওয়া হলেও বানায়নি বা বানালেও সেটা কেউ জানেনা’ এধরণের সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণের কথা জানাতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেসব ছবি বানানো হয়নি তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি, তিনবার নোটিশের মধ্যে সাড়া না দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে অনুদানের সিনেমা প্রথমে কমপক্ষে ১০টি ও পরবর্তীতে কমপক্ষে ২০টি হলে মুক্তি দেওয়া নীতিমালায় যুক্ত করেছি। সিনেমা শিল্প বাঁচাতে বাণিজ্যিক ছবির প্রতি আমরা জোর দেই। আর্ট ফিল্মেও প্রতিবার আমরা অনুদান দিয়েছি, ডকুমেন্টরিতেও দেওয়া হচ্ছে যা নীতিমালাতেও আছে। অনুদানের পরিমাণ দ্বিগুণ করে আগের ১০ কোটিকে এখন ২০ কোটি টাকায় উন্নীত করেছি। একটি ছবির জন্য ৩০ লাখ, ৪০ লাখ টাকা দেওয়া হতো যা ৭৫ লাখে উন্নীত করেছি।’

‘এসবের ফলে সিনেমা হল ৬৫টি থেকে এখন ২১০টি হয়েছে, এক বছরের মধ্যে আরো একশটা বাড়বে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সিনেপ্লেক্স, সিনেমা হল নির্মাণ, পুণ:নির্মাণ ও সংস্কারে গঠিত ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ব্যাংকে দরখাস্ত পড়েছে। চলচ্চিত্রের শিল্পের সুদিন ফিরে এসেছে।

ড. হাছান বলেন, ‘বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদান দেওয়া বিশ্ব পরিস্থিতি ও করোনা প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ আছে। সব ধরনের সিনেমার মধ্যে মূলধারার হচ্ছে বাণিজ্যিক ছবি। সেটা সবাইকে স্বীকার করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আপনাদের হাত ধরে আমাদের চলচ্চিত্র আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে। এখন বিশ্ব অঙ্গণে কিছুটা জায়গা করে নিয়েছে সেটি আরো বিস্তৃত হবে, সেটিই আমার প্রত্যাশা।’

সেন্সর বোর্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে সিনেমা শিল্পের জন্মের পর থেকেই সেন্সর বোর্ড ছিলো, সেন্সর বোর্ড থাকতে হবে। বোর্ড যাতে অহেতুক কোন কিছু না করে সেটি অবশ্যই আমরা নজরে রাখি। কোনো সিনেমা যদি আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক হয় এবং কেউ যদি কোনো সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমা বানিয়েছে বলে দাবি করার পর দেখা যায় যে সেখানে পুরো সত্য ঘটনাটা আসে নাই তখন তো সেন্সর বোর্ড প্রশ্ন রাখবেই। এবং এমন যা পাওয়া গেছে, সেটি সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

চলচ্চিত্র নেতৃবৃন্দ এরপর তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো: মকবুল হোসেনের সাথে সাক্ষাত করেন। বিভেদ ভুলে সবাই এক হয়ে সিনেমা শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের পাশে থাকতে হবে বলেন সচিব।

চিত্রগ্রাহক সংস্থার সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু, মহাসচিব আসাদুজ্জামান মজনু, নির্বাহী সদস্য, সৈয়দ শহীদুল্লাহ দুলাল, এডিটরস গিল্ড সভাপতি আবু মুসা দেবু, পরিচালক সমিতির সহ-সভাপতি ছটকু আহমেদ, উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম রানা, সাংস্কৃতিক সচিব শাহীন কবির টুটুল, শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি রিয়াজ, চিত্রনায়িকা নিপুন আক্তার, সংগীতা, অপু বিশ্বাস, কেয়া, অভিনেত্রী জেসমিন মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category