• মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

টেকনাফে ব্যবসায়িকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় ডিবির বহিষ্কৃত ৭ সদস্যের কারাদণ্ড

বিবর্তন ডেস্ক:
Update : মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
টেকনাফে ব্যবসায়িকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় ডিবির বহিষ্কৃত ৭ সদস্যের কারাদণ্ড
টেকনাফে ব্যবসায়িকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় ডিবির বহিষ্কৃত ৭ সদস্যের কারাদণ্ড

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে ব্যবসায়িকে জিম্মি করে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বহিষ্কৃত সাত সদস্যের প্রত্যেককে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাভোগের আদশে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তথ্য প্রমানে সত্যতা পাওয়ায় বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। ৩৬৫ ধারায় ৫ বছর এবং ৩৮৬ ধারায় ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। উভয় সাজা এক সাথে ভোগ করতে হবে। ফলে সাজা ৭ বছর বলে গণ্য হবে। রায় ঘোষণাকালে আসামি সকলেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

 

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার শহর থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর ‘ক্রসফায়ার’র হুমকি দিয়ে তার স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

 

দেন-দরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় পরিবার। উক্ত টাকা পৌঁছে দেওয়া হলে পরদিন ভোররাতে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাচৌকির কর্মকর্তাকে জানান। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সেনাবাহিনী এই নিরাপত্তাচৌকি স্থাপন করা হয়েছিল।

 

মেরিন ড্রাইভ সড়কে মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যদের মাইক্রোবাসে তল্লাশি করে তাতে ১৭ লাখ টাকা পান চৌকির সেনাসদস্যরা। এ সময় ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন তারা।

 

পিপি আরও জানান, এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদি হয়ে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজমকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করেন।

 

এ মামলায় ২০১৮ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ডিবির সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

 

অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে জামিনে থাকা ডিবি পুলিশের ৭ সদস্যের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করেন বিচারক এবং মামলার রায়ের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সময় নির্ধারণ করেন।

 

তবে, আজ শারীরিক অসুস্থতার কারণে আদালতে মামলার বাদী আবদুল গফুর উপস্থিত ছিলেন না। তবে তাঁর বড় ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি কেউই আইনের উর্ধ্বে নয় সেটি তুলে ধরেছে আদালত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category