মিড ডে মিলের টাকা পয়সা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বাক বিতন্ডার জেরে স্কুলের শিক্ষক ছাত্র মিলে পিটিয়েছে এক অভিভাবককে।
আজ সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে মেহেরপুরের গাংনীর জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে।
মারধরের শিকার ওই অভিভাবক জোড়পুকুরিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে খাব্বাব বিন সাইফুল।
খাব্বাব বিন সাইফুল জানান, তার বোন ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রি।
তার জন্য মিড ডে মিলের চাল ও টাকা দেয়ার জন্য শেণি শিক্ষক গোলাম রসুলের কাছে যান।
সেখানে টেবিলে হাত রাখায় শিক্ষক রাগান্বিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালালমন্দ করেন। প্রতিবাদ করেন খাব্বাব বিন সাইফুল।
এক পর্যায়ে শিক্ষক গোলাম রসুল তাকে কিল ঘুষি মারেন। শেণি কক্ষ থেকে বের হয়ে আসার সময় সহকারী শিক্ষক আব্দুল হান্নান সিঁড়ির নিচে বেদম প্রহার করেন ও ছাত্রদেরকে লেলিয়ে দেন।
স্কুল শিক্ষক মিজান ও ছাত্র আকাশ এবং আরো কয়েকজন মিলে খাব্বাব বিন সাইফুলের মায়ের সামনে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে।
ওখান থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেয় জোড়পুকুর বাজারে। প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
খাব্বাব বিন সাইফুলের মা দিলরুবা কান্না করে বলেন, তার সামনেই সবাই মিলে ছেলে খাব্বাবকে মারধর করতে থাকেন।
অনুরোধ করার পরও কেউ শোনেনি। বরং অনেকে তাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
অনেকেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
অভিভাবকরা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকলেও শিক্ষকরা এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রিদেরকে বিদ্যালয়ের অঘোষিত ছাত্রবাসে থাকতে বাধ্য করেন।
যে কোন সময় ছাত্রিদের শ্লিলতাহানীসহ নানা অপকর্মের ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীরা একরকম জিম্মি হয়ে পড়েছে।
শিক্ষার্থীদেরকে নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় তারা কেউ মুখ খুলে না। ছাত্রাবাসে না থাকলে নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং সমাপনী পরিক্ষায় সমস্যার সৃষ্টি হবে বলে ভীতি প্রদর্শন করা হয় বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন ছাত্র।
তবে তারা তাদের নাম প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।
সাবেক মেম্বর সাহাব উদ্দিন বলেন, এই বিদ্যালয়টি নীলকরদের মতো আচরণ করে।
সব কিছুতেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মতামত গ্রহণ করা হয় না। তাদের আচরণও নীলকরদের মতো।
কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলেই মারধরসহ নানা ধরণের অত্যাচার চালানো হয়।
এদিকে প্রধান শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়ে এসে খাব্বাব বিন সাইফুল শিক্ষককে আগেই মারধর করায় কয়েকজন শিক্ষক তাকে ধাক্কা দেয়। ছাত্ররাও ফুঁসে উঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে ওই অভিভাবককে বাড়িতে পাঠানো হয়।
বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, ছাত্রদের ভাল ফলাফলের জন্যই ছাত্রাবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাউকে জোর পূর্বক রাখা হয়নি। কোন অঘটন ঘটারও সম্ভাবনা নেই।