কুষ্টিয়ার আলোচিত কৃষক শাহাজুল হত্যা মামলায় জাসদ নেতা কারশেদ আলমসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আবীর পারভেজ এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে কারশেদ আলম, তার মেজভাই হামিদুল ইসলাম ও বড় ভাই আসাদুল ইসলামের ছেলে রাসেল। এ মামলায় অপর ৮ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
কারশেদ আলম কুষ্টিয়া জেলা জাসদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রূপকার ও মুক্তি কামনায় গঠিত বিশেষ বাহিনী নিউক্লিয়াসের সদস্য কাজী আরেফ আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী। তিনি কাজী আরেফ স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করছেন। রায় ঘোষণার পরপর শত শত জাসদ নেতাকর্মী আদালতে জড়ো হন। দণ্ডপ্রাপ্তদের পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন, ২০১২ সালের ১৫ আগস্ট বিকেলে লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে কৃষক শাহাজুলের গরু খেত খাওয়ার কারণে প্রতিপক্ষের লোকেরা তাকে মারধর করে। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাজুলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বংশীয় ও সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দণ্ডপ্রাপ্তদের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। অথচ যারা তাকে হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেনি। নিহতের চাচাতো ভাই আশরাফুল ইসলাম ঘটনার কয়েকদিন পরে কারশেদ আলম ও তার পরিবারের লোকজনদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আমরা এ রায় মানি না। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৭টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ শাহাজুলের মাথায় আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এবিষয়ে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, কৃষক শাহাজুল হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ মামলায় অপর আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত।