রানের পাহাড় গড়েও জিততে পারলো না সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। ১৯৪ রান তাড়া করতে নেমে মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স ১ ওভার হাতে রেখেই ৪ উইকেটে হারিয়ে জয় নিশ্চিত করেছে। বিপিএলের ইতিহাসে যা যৌথভাবে তৃতীয় সেরা চেজের ঘটনা। সর্বোচ্চ চেজ ছিল ২০২০ সালে। ঢাকা প্লাটুনের ২০৫ রান চেজ করে জিতেছিল খুলনা টাইগার্স। টানা দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে সিলেট।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বরিশাল ও সিলেট। রান বন্যার ম্যাচে আলোচনায় ফিল্ডিং। দুই ইনিংসে মিলিয়ে অন্তত ১৫টি মিস ফিল্ডিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। এই মিস ফিল্ডিংয়ের সুযোগ নিয়েই দুই দল রানের বন্যা বইয়েছে। আগে ব্যাটিং করে বরিশাল সাকিবের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে। কঠিন সেই লক্ষ্য শান্ত-তৌহিদ-জাকির-মুশফিকের ব্যাটে অনায়াসেই টপকে যায় সিলেট।
১৯৫ রানের কঠিন এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই কলিন অ্যাকারম্যান রান আউটের শিকার হন। তবুও সমস্যায় পড়তে হয়নি সিলেটকে। কেননা বড় স্কোর চেজের পথে ঠিক যেভাবে ব্যাটিংয়ের প্রয়োজন ছিল, সেভাবেই নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয় ইনিংস গড়েছেন। ভুল বোঝাবুঝিতে শান্ত রান আউটে সাজঘরে ফেরায় দুইজনের ১০১ রানের জুটি ভাঙে। শান্ত ৪০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন।
শান্তর বিদায়ের পর স্কোরবোর্ডে রানের গতি বাড়ান জাকির হাসান। ১৮ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৩ রানের ইনিংস খেলে জাকির জয়ের পথে সিলেটকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যান। তার আগে অবশ্য তৌহিদ হৃদয় ৩৪ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ৫৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন। দারুণ এই ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তৌহিদ। জাকিরের আউটের পর বাকি কাজটুকু অনায়াসেই পার করেন মুশফিকুর রহিম ও থিসারা পেরেরা। মুশফিক ১১ বলে ২৩ ও পেরেরা ৯ বলে ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন।
বরিশালের হয়ে চাতুরাঙা সিলভা ও করিম জান্নাত একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেওয়া বরিশাল শুরুটা করে দুর্দান্ত। বরিশালের বোলারদের নিয়ে ছেলে খেলায় মেতে উঠেন সাকিব-এনামুল-চাতুরাঙারা। এনামুল ও চাতুরাঙা মিলে ওপেনিং জুটিতে তোলেন ৬৭ রান। এনামুলের বিদায়ের পর (২৯) চাতুরাঙাও দ্রুত বিদায় নেয় (৩৬)। ইফতেখার আহমেদ (১৩) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন সাকিব আল হাসান। ৩২ বলে ৬৭ রান করে মাশরাফির বলে আমিরের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় সাকিব নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। সাকিবের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহর ১২ বলে ১৯ এবং করিম জান্নাতের ১২ বলে ১৭ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে বরিশাল ৭ উইকেট হারিয়ে করে ১৯৪ রান।
সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি কিছুটা খরুচে ছিলেন। ৪৮ রান খরচায় তার শিকার ৩ উইকেট। ইমাদ ওয়াসিম, রেজাউর রহমান রাজা ও থিসারা পেরেরা একটি করে উইকেট নিয়েছেন।