মেহেরপুরের মুজিবনগরের ভবেরপাড়া গ্রামের ফরিদনগর “ইয়া রসুলুল্লাহ” (সঃ) হাফিজিয়া মাদ্রাসার ৬ শিশু ছাত্রকে রক্তাত্ব জখম করেছে শিক্ষক। পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগীতায় হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বুধবার সকালে অভিভাবকদেও কাছে হস্তান্তর করে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকের এ ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে অভিভাবকদের মাঝে।
আহতরা শিশুরা হলেন, মুজিবনগর উপজেলার ভবেরপাড়া গ্রামের খোকা আলীর ছেলে মিরাজ উদ্দীন(১২), একই গ্রামের বোরহান উদ্দীনের ছেলে রকিবুল ইসলাম(১২), সোনাপুর গ্রামের সোহরব উদ্দীনের ছেলে সালমান সাকি(১১), একই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আরাফাত (১১) এবং রিয়াদ হোসেন(১৪) ও আরিফুল ইসলামের ছেলে আরমান আলী(৯)।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে এক শিশু ছাত্র ঘুমন্ত অবস্থায় বিছানায় প্রসাব করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে ছাত্রদের পেটাতে থাকেন প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা ফাহাদ শেখ। শিশুদের কান্নাকাটি শুনে এগিয়ে আসে আশেপাশের মানুষ। তারা শিক্ষকের মাধরের বিষয়টি প্রতিবাদ জানিয়ে পুলিশে খবর দেওয়া। অবরুদ্ধ করে রাখা হয় শিক্ষককে। পুলিশ রাতেই শিশুদের উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, নিজেদের মন মতো পরিচালনা করেন ফরিদনগর “ইয়া রসুলুল্লাহ” (সঃ) হাফিজিয়া মাদ্রাসা এন্ড কলেছন নেছা আদর্শ নূরানী শিশু এবতেদায়ীর প্রধান শিক্ষক ও তার ভাই। কোন কমিটি বা স্থানীয়দের কোন তোয়াক্কা করেনা প্রতিষ্ঠান প্রধান হাফেজ মাওলানা ফাহাদ শেখ।
আরও জানাগেছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও হেফজ ও এবতেদায়ী শাখায় মোট শিক্ষার্থী ৯০-৯৫ জন। এর মধ্যে ১৫ জন শিক্ষার্থী হেফজ পড়ার জন্য আবাসিক থাকে। আবাসিকের পরিবেশও খুব একটা স্বাস্থ্যকর না।
অভিভাবকরা বলেন, আমাদের ছেলেদের হেফজ খানায় পড়ার জন্য আবাসিকে রেখেছিলাম। ছোট মানুষ ঘুমের মধ্যে প্রসাব করেছে তার জন্য এভাবে জানোয়ারের মতো মেরে জখম করেছে এটা কি ধরণের শিক্ষা। আমরা এই প্রতিষ্ঠানে আর সন্তান রাখবো না।
মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষককে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষকসহ অধিকাংশ অভিভাবক এসে প্রথমবার এমন অপরাধ করার ফলে পরবর্তীতে এমন কাজ করবে না মর্মে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।