• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়াতে বৃষ্টির আশায় ইসতেসকার নামাজ আদায়

বিবর্তন প্রতিবেদক
Update : সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪
কুষ্টিয়াতে বৃষ্টির আশায় ইসতেসকার নামাজ আদায়
কুষ্টিয়াতে বৃষ্টির আশায় ইসতেসকার নামাজ আদায়

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে তীব্র তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে এবং বৃষ্টির প্রত্যাশা করে নামাজ ইসতেসকার আদায় শেষে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল পৌণে ৯ টায় উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের খড়িলার বিলে খোলা আকাশের নিচে এ নামাজ শেষে মোনাজাতের আয়োজন করেন স্থানীয়রা।

এতে ইউনিয়নের বল্লভপুর, রসুলপুর, ভবানীপুর, জোতমোড়া ও বরইচারা গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক নানা বয়সি মানুষ অংশ নেন। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন রসুলপুর মাদ্রাসার হেফজ্বখানার শিক্ষক মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দিন আল ফরিদী। আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার একই স্থানে সকাল ৮ টায় বৃষ্টির জন্য নামাজ ইসতেসকার অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

জানা গেছে, কালবৈশাখীর মৌসুমেও প্রায় এক মাস বৃষ্টির দেখা নেই। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে গেছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি উঠছেনা অগভীর নলকূপ ও সেচ পাম্পে। তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। আম-লিচুর গুটি ঝড়ে পড়ছে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার আয়োজন করেছেন। নামাজে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য আগে থেকেই মাইকে প্রচার করা হয়েছিল।

সকালে সরেজমিন খড়িলার বিলে গিয়ে দেখা যায়, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি শার্ট, লুঙ্গি, গামছা, টুপি পরে জায়নামাজ, খেজুরের পাটি, গামছা নিয়ে নানা-বয়সি মানুষ মাঠে হাজির হয়েছেন। হুজুর প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশে নামাজের নিয়ম-কানুন বলেন। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন সবাই। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে সবাই প্রচন্ড গরম, তীব্র তাবদাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে এবং বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করেন তারা। এসময় কৃষক মিরাজুল রহমান বিশ্বাস জানান , বৃষ্টিবাদল নেই। খুব তাপ। কলে (টিউবওয়েলে) ও বোরিংয়ে পানি উঠছেনা। মাঠের খেতখোলা নষ্ট হচ্ছে। তাই বৃষ্টি চেয়ে নামাজের মধ্যে আল্লাহকে রাজি খুশি করানোর জন্য কান্নাকাটি করেছেন তিনি। রসুলপুর মাদ্রাসার হেফজ্বখানার শিক্ষক মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দিন আল ফরিদী জানান, কোরআন-হাসিদের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, তা হলো মানুষের সৃষ্ট পাপের কারণে মহান আল্লাহ এমন অনাবৃষ্টি ও খরা দেন। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) সাহাবীদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইস্তিসকা নামাজ আদায় করতেন। সেজন্য তাঁরা মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট পাপের তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুরাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন। দহখোলা দক্ষিণ ভবানীপুর ক্বওমী হাফেজিয়া মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা রাসেল মোল্লা জানান, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি গাছপালা সহ সবাই খুব কষ্টে আছেন। সেজন্য তারা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়েছেন। আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার একই স্থানে বৃষ্টির নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগেরর কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, সকালে ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রী তাপমাত্রা থাকছে। তবে বিকেল ৩ টার দিকে তা বেগে ৩৯ থেকে ৪১ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। তাঁর ভাষ্য, প্রায় এক মাস কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবণাও নেই বলে তিনি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category