• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন

হরিনাকুন্ডে বিধি ভেঙে ডেপুটেশনে শিক্ষক!

শিশির পারভেজ, হরিণাকুণ্ডু
Update : বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩
হরিনাকুন্ডে বিধি ভেঙে ডেপুটেশনে শিক্ষক!
হরিনাকুন্ডে বিধি ভেঙে ডেপুটেশনে শিক্ষক!

প্রধান শিক্ষক সংকট, শিক্ষক দ্বন্দ্বসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কোনও রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। শিক্ষার্থী সংকট, শিক্ষক দ্বন্দ্বে চলমান অষ্টম শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে স্কুলটির একজন শিক্ষিকাকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ডেপুটেশনে দিয়েছেন হরিণাকুন্ডু উপজেলা শিক্ষা অফিসার। অথচ বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। নেই শিক্ষা বিভাগের তদারকি।
মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নিয়েই কাপাশহাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামিমা সুলতানা দুলি চলতি মাস থেকে ডেপুটেশনে যান ভালকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি ওই স্কুলে কাজ করছেন। হরিণাকুন্ডু উপজেলা শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুর রহমানের সুপারিশে তাকে ডেপুটেশনে (প্রেষণে) দেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা।
নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষার্থী অনুপাতে ভালকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ জন শিক্ষক থাকার কথা। তবে বর্তমানে স্কুলটিতে ৭ জন শিক্ষক রয়েছে। আর কাপাশহাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক কম রয়েছে। এতে করে পড়াশুনা ব্যাহত হচ্ছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতি না নিয়ে শামিমা সুলতানা দুলি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ‘ম্যানেজ’ করে বিধি ভঙ্গ করে চলতি মাস থেকে ডেপুটেশনে (প্রেষণে) যান।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডেপুটেশনে চলে যাওয়ায় ওই স্কুলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। অথচ কাপাশহাটিয়া স্কুলের নামেই বেতন-ভাতা পাচ্ছেন শামিমা সুলতানা দুলি।
কি কারনে শামিমা সুলতানা দুলি নামের ওই শিক্ষিকাকে ডেপুটেশন দেয়া হয়েছে তা জানাতে পারেনি উপজেলা শিক্ষা অফিস। তবে কাপাশহাটিয়া স্কুল থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

কাপাশহাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষিকা রত্না রানী ঘটকের কাছে ওই শিক্ষকের ডেপুটেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডেপুটেশন উপজেলা শিক্ষা অফিসার দিয়েছেন। কতজন শিক্ষক আছে সেটাও তিনি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে বলেন।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন সিরাজ বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে তিনি ওই বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে আছেন। তবে কাপাশহাটিয়া সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রত্না রানী ঘটক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা ওই শিক্ষিকাকে ফেরত নিতে দাবি তুলেছেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিরব রয়েছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুর রহমান জানান, ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ কারনে ডেপুটেশন (প্রেষণে) দেয়া হয়েছে। জানুয়ারী মাসে বদলী চালু হলে তাকে অন্যত্র বদলী করা হবে বলে জানান তিনি।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সুপারিশে ওই শিক্ষিকাকে কাপাশহাটিয়া থেকে ভালকী সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ডেপুটেশন দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ডেপুটেশন বাতিল করার কথা জানান তিনি।
খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, সিএনএড,বিপিএড ও মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যদি কোন শিক্ষক থাকে সেক্ষেত্রে ডেপুটেশনে (প্রেষণ) শিক্ষক পাবে বিদ্যালয়। এর বাইরে কোন সুযোগ নেই। নিয়ম ভেঙ্গে ডেপুটেশন দেয়া হলে খোঁজ নিয়ে ডেপুটেশন বাতিল করে ওই শিক্ষিকাকে স্কুলে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category