• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১২:১২ অপরাহ্ন

মেহেরপুরে তীব্র তাপদাহে ঝরে যাচ্ছে আম ও লিচুর গুটি

বিবর্তন প্রতিবেদক
Update : রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মেহেরপুরে তীব্র তাপদাহে ঝরে যাচ্ছে আম ও লিচুর গুটি
মেহেরপুরে তীব্র তাপদাহে ঝরে যাচ্ছে আম ও লিচুর গুটি

তীব্র তাপদাহে পুড়ছে মেহেরপুর। সারাদেশের মতো এ জেলার উপর দিয়েও বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপ প্রবাহ। অসহনীয় গরমে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রাণীকূল।

মেহেরপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আদ্রতা ১৮% রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই তীব্র গরমে শুধুমাত্র মানুষ ও প্রাণিকূলই প্রভাব পড়েছে ফসলের উপর। তীব্র তাপের কারণে শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে আম ও লিচুর গুটি। পানির সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগেও চাষি ও ব্যবসায়ীদের মনে আসছে না স্বস্তি। একে তো এবছর গাছে কম আম, তার ওপর ঝরে পড়ছে।

সব মিলিয়ে এক ধরনের লোকসানের আশঙ্কা চাষি ও ব্যবসায়ীদের মনে। চাষিদের দাবি প্রতি বছর আমের গুটি ঝরে যায় তবে তাকে সাধারণ গুটি ঝরা ধরা হয়। কিন্তু এ বছর সাধারণের চেয়ে বেশি আমের গুটি ঝরছে রৌদ্রের তাপে। তাদের ধারণা ইতোমধ্যে অনেক বাগানে ১০ থেকে ১৫ ভাগ আমের গুটি ঝরে গেছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ল্যাংড়া, হিমসাগর, ফজলি, আ¤্রপালি, বোম্বায়সহ অন্যান্য জাতের আমের বাগান আছে। স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত না থাকায় এসব বাগানের মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বাগানে হালকা সেচের পাশাপাশি আমের গুটি ঝরা রোধে পরিমিত মাত্রায় বোরন স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

এ বছর জেলার আমের বাগানগুলোতে মুকুল কম এসেছিলো। বেশিরভাগ গাছে নতুন পাতার জন্ম হয়েছে। এ ছাড়া অনেক গাছে নতুন পাতা না এলেও মুকুল আসেনি। যদিও সেই গাছগুলোতে গেল বছর আম এসেছিল। কিন্তু এ বছর নেই। আবার যে গাছগুলোতে আমের মুকুল ছিল সেগুলোর আবার গুটি ঝরে গেছে। গুটি ঝরা ঠেকাতে সেচ দিচ্ছেন অনেকেই।

আমচাষি মনিরুল ইসলাম জানান, তার তিনটি বাগানে ৮৫টি আমের গাছ রয়েছে। তার মোট গাছের তিন ভাগের একভাগ গাছেও আম নেই। তার দাবি এ বছর মুকুল আসেনি। তারপরও যে কয়েকটা গাছে মুকুল ছিল, তাও আবার ঝরে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এ বছর আমের উৎপাদন কম হবে।

আমচাষি সোবহান বলেন, আমের জন্য এ সময় বৃষ্টি খুব প্রয়োজন। বৃষ্টি হলে আশা করা যায় আমের গুটি ঝরা বন্ধ হয়ে যাবে। তা না হলে তীব্র তাপে গাছের আমের আরও বেশি গুটি ঝরে যাবে। গাছ থেকে স্বাভাবিক আমের গুটি ঝরে। কিন্তু বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আমের গুটি ঝরছে। তার হিসাবে গাছের ১০ থেকে ১৫ ভাগ আমের গুটি ঝরে গেছে। প্রচ- রোদের কারণে ছোট-বড় আম ঝরে পড়ছে। এতে করে ফলনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

বাগান মালিক মিনারুল ইসলাম জানান, এবার আম কম হবে। বিগত বছরের তুলনায় আমের মুকুলও কম ছিল। এ বছর মুকুলে ফুল ফোটার সময়ে বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ফলে আমের অনেক মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে। আর অবশিষ্ট যে আম টিকে আছে, তা শুকিয়ে পড়ে যাচ্ছে। এতে এবার আমের ফলন কম হবে।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সামসুল আলম বলেন, ‘তীব্র তাপের কারণেই আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যেসব বাগানে আম ঝরে যাচ্ছে, বিকেলের দিকে পরিমিত মাত্রায় বোরন স্প্রে করলে আম ঝরা রোধ করা যাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category