• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ

বিবর্তন প্রতিবেদক:
Update : বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলী সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেছেন, একাত্তরের ১৭ এপ্রিলে মুজিবনগরে প্রথম সরকারের শপথের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পেযেছিল বাংলাদেশ।

বুধবার (১৭ এপ্রিল)দুপুরে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর আম্রকাননে মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

অন্যদিকে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বিএনপি জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বলেছেন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে যারা সম্প্রদায়িক শক্তির হাতে সপে দিতে চায় তাদের প্রতিরোধ করাই হোক আজকের মুজিবনগর দিবেসের শপথ।

অপরদিকে বিএনপির বিরুদ্ধে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, পচাত্তর পরবর্তী পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিএনপি ও তাদের দেশী বিদেশী দোসররা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে।

একাত্তরে প্রথম সরকারের শপথের দিন ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস উদযাপনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এছাড়াও জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় দিবসটি পালনে আম্রকানন ঘিরে জাকজমকপূর্ণ নানা আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, মুজিবনগর দিবস ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে অত্যান্ত দুঃখের বিষয় দিবসটি পালনে দেশব্যাপী আগের মত কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তাই আগামি বছর থেকে সারা দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি পালনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

সভাপতির বক্ততৃায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, আমাদের চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে থেকে আমরা দিবসটি পালন করি। স্বাধীনতা বিরোধী অসাম্প্রদায়িক শক্তি যারা বাংলাদেশ চায় না তাদেরকে প্রতিহত করাই হোক এ দিনটির শপথ।

আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জিয়াউর রহমানকে পাকিস্থান এজেন্ট আখ্যায়িত করে বলেন, তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর দালাল আইন বাতিল করে সাড়ে এগার হাজার যুদ্ধপরাধীকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত যুদ্ধপরাধী জামায়াতে ইসলামকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তারা এখনও বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা ছিলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সম্মানিত অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রথম সরকারের স্বরাষ্ট্র, কৃষি ও পুনর্বাসনমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামানের পুত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র খাইরুজ্জামান লিটন, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দীন আহম্মেদের কন্যা শিশু ও মহিলা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন। বিশেষ বক্তা ছিলেন মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর, জেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নুর লিপি, অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, পারভীন জামান কল্পনা ও নির্মল কুমার চ্যাটার্জি। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃববৃন্দ।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রীগণ, সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ইতিমধ্যে ৮ হাজার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া কেউ যদি ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পরে তাহলে সাথে সাথে সেই মুক্তি যোদ্ধার সনদ ও বাতিল করা হবে। দ্রুততম সময়ে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র নির্মান কাজের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

পরে জাতীয় ও দলীয় পকাতা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এর পরে গার্ড অব অনার এবং কুঁচজকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ, বিজিবি, আনছার, বিএনসিসি, গালর্স গাইড ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের কুঁচজকাওয়াজ মুগ্ধ করে উপস্থিত হাজারো মানুষকে।

দ্বিতীয় পর্বে শেখ হাসিনা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এ আলোচনা সভা। আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশ আনছার-ভিডিপি অর্কেষ্ট্রা দল ‘‘সোনালী স্বপ্নের দেশ” নামের গীতিনাট্য পরিবেশেন করেন। যেখানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরা হয়।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন যৌথভাবে জাকজমকপূর্ণ আয়োজন করে। আগের দিন থেকেই নানা রং বে-রংয়ের ফেস্টুন, তোরণ স্থাপণ, রং এবং আলোক সজ্জা করা হয় গোটা মুজিবনগর কমপ্লেক্সজুড়ে। সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন দেশের প্রশিদ্ধ শিল্পিরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category