মেহেরপুরের গাংনীতে জোরপূর্বক জমি দখলের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) জমির মালিকগণ এ সংবাদ সম্মেলন করে জমির মালিকানার কাগজপত্র প্রদর্শণ করেন।
বাঁশবাড়িয়ার সন্নিকটে স্থাপিত এক সময়ের প্রাক্তন সৈনিক সংস্থার কার্যালয়ের সমনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক সেনা সদস্য কাজিম উদ্দীনের বড় ছেলে সেলিম রেজা।
লিখিত বক্তব্যে বলেন, গাংনীর বাশবাড়িয়াস্থ পৌর এলাকার পলাশীপাড়া সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের পুর্বপার্শ্বে প্রাক্তন সৈনিক সংস্থা নামে একটি সংগঠন ছিল। যার সভাপতি ছিলেন আমার বাবা সাবেক সেনা সদস্য মোঃ কাজিম উদ্দীন। এ সংস্থার শুরুতে সদস্যদের মাসিক ৫০ টাকা চাঁদা সঞ্চয় করা হতো। ২০০১ সাল পর্যন্ত আনুমানিক ৫০/৬০ হাজার টাকা সঞ্চয় হয়। এই ৫০ হাজার টাকার সাথে আমার পিতা আরও ৫০ হাজার টাকা ধার হিসেবে দিয়ে এই জমিটি ক্রয় করেন। যা সংস্থার নামে রেজিস্ট্রি হয়। পরবর্তীতে ২০০৩/২০০৪ সালের দিকে সংস্থার কার্যক্রম অকার্যকর হয়ে পড়ে। সদস্যদের অনেকে সংগঠন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়। ধারের টাকা ফেরত পেতে আমার পিতা বিপাকে পড়েন। কিছু সদস্যদের অনিহার কারণে সংস্থার কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে সংস্থার এই জমি বিক্রি করে আমার বাবার ধারের টাকা ও সদস্যদের সঞ্চয় ফেরত এবং সংস্থার উন্নয়নের সিদ্ধান্ত হয়। জমি বিক্রি করে একটি ভাড়া বাসায় সংস্থার কার্যক্রম চালু রাখার কথা ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে অনেক সদস্য তাদের জমানো সঞ্চয় ফেরত চাইতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার পিতাকে জমিটি কিনে নিতে বলে সংস্থার সদস্যরা। কিন্তু আমার পিতার টাকা না থাকায় জমিটি অন্য জায়গায় বিক্রি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সংস্থার সদস্যদের সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত আমার মায়ের নামে তেরাইল কলেজের সামনের জমি বিক্রি করে এই জমি কিনতে বাধ্য হন।
পরবর্তীতে আমার পিতা অনেক চেষ্টা করে সদস্যদের টাকা ফেরত দিতে থাকেন। এর মধ্যে সাবেক সেনা সদস্য আতর আলী, জিহাদ আলী, জিল্লুর রহমান, মোকাদ্দেস আলী, আব্দুস সুবহান, বিল্লাল হোসেন, মোকলেছুর রহমান, আব্দুল মালেক, আল ফারুক, হাজী ইসরাফিল, রবিউল ইসলামসহ প্রায় সকল সদস্য তাদের জমাকৃত সঞ্চয় ও লাভসহ গ্রহণ করেন। যার প্রমাণপত্র আমাদের কাছে রয়েছে।
২০০৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে সদস্যদের টাকা পরিশোধ করে ২০১৮ সালে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। ২০০৫ সালে যখন তারা জমি বিক্রি করে দেয় তখন থেকে অদ্যবধি জমিটি আমাদের দখলে রয়েছে। আমাদের পরিবেশক ব্যবসার পণ্য এখানে রাখা হয়। এটি গোডাউন এবং ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার হয়। সংস্থার সভাপতি হিসেবে আমার পিতা কাজিম উদ্দীন জমি রেজিস্ট্রি দেন আমার মায়ের নামে। মায়ের নামে দেওয়ার কারণ ছিল- আমার মায়ের নামীয় তেরাইল কলেজের সামনে এক বিঘা জমি বিক্রয় করে এই জমি কেনা হয়েছিল। সাবেক সেনা সদস্য জিহাদ আলী প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে জমি বিক্রি করিয়ে এই জমি ক্রয় করান।
আমার পিতা সাবেক সেনা সদস্য কাজিম উদ্দীন একজন সহজ, সরল ও সৎ মানুষ। তার সম্পর্কে সকলেই অবগত। একজন সহজ সরল মানুষের মাথার উপর সমিতির সঞ্চয় চাপিয়ে দিয়ে তাকে জমি ক্রয় করতে বাধ্য করা হয়েছিল। সাবেক সেনা সদস্য জিহাদ আলীসহ যারা এই কাজটি করতে বাধ্য করেছিলেন তাদের কয়েকজন আবারও জমি নিয়ে দৌড়ঝাপ করছে যা খুবই দুঃখজনক। একটি জমি ১৭ বছর আগে বিক্রি করে আবার কিভাবে সেই জমি তারা দাবি করেন। বৈধভাবে জমি ক্রয় করে তার খারিজ খাজনা দিয়ে আসছি। দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের দখলে রয়েছে। তাই যারা বেআইনীভাবে এখন সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর চেষ্টা করছেন। এতে আমাদের সামাজিক ও ব্যবসায়ীক সম্মনহানী হচ্ছে। বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ ভবনে আমাদের পরিবেশক ব্যবসার মালামাল রয়েছে। সেখানে অবৈধ হস্তক্ষেপে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হতে পারে। তাই নিরাপত্তা ও অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধে থানায় জিডি করা হয়েছে।