ভালোবেসে অনেক স্বপ্ন নিয়ে প্রায় দুই মাস আগে ঘর বাঁধতে বিয়ে করে রমজান ও মুক্তা। কিন্তু সারাজীবন আর এক সঙ্গে থাকা হল না তাদের। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ঝিনাইদহের হাটবাকুয়া গ্রামের মাঠের গাছ থেকে স্বামী ও স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের বুকে ও হাতে মেহেদী দিয়ে লেখা ছিল ‘আমি মুক্তা ও রুজিব। আমরা চলে যাচ্ছি। আমাদের মৃত্যুর জন্য পরিবার দায়ী।
রমজান হোসেন রুজিব (২০) ঝিনাইদহ জেলা সদরের তালতলা হরিপুর গ্রামের চমু শেখের ছেলে এবং মুক্তা খাতুন (১৮) হরিনাকুন্ডু উপজেলার বিন্নি গ্রামের গোলাম হোসেনের মেয়ে । রমজান হোসেন ঝিনাইদহ জেলা শহরের হামদহ এলাকার একটি মোটর গ্যারেজে কাজ করতো।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় দুই মাস আগে রমজান পরিবারের অজান্তে মুক্তাকে বিয়ে করেন। এরপর থেকেই উভয় পরিবারের লোক তাদের সম্পর্ক মেনে নিচ্ছিল না। এ নিয়ে উভয় পারিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে মুক্তাকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া কথা ছিল। অথচ রমজান ও মুক্তা বুধবার রাত ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে সকালে বাড়ির পাশের হাটবাকুয়া গ্রামের মাঠের একটি মেহগনি গাছ থেকে তাদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পাশের গ্রামের আখি খাতুন নামের এক নারী বলেন, ছেলেটা দুই মাস হয়েছে বিয়ে করেছে। প্রথম দিকে তাদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিল পরিবারের লোকজন। কিন্তু এর কয়েকদিন পর মেয়ের পরিবারের লোকজন ছেলের বাড়িতে আসলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। সে সময় থেকেই তাঁরা আবার মুক্তা ও রুজিবের সম্পর্কে বাঁধা দিতে থাকে। আলাদা করে দিতে চায় তাদের। আজ মুক্তাকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বাবার বাড়ির লোকজনের। কিন্তু রমজান ও মুক্তা একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিল। এজন্য হয়তো তারা আত্মহত্যা করেছে।
নিহতের বড় ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা রাতের খাবার খেয়ে একসঙ্গে বসে অনেকক্ষণ গল্প করেছি। এরপর রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে খবর পাই তারা দুজন মাঠের একটি মেহগনি গাছের ডালে রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে । কেন তারা এ কাজ করলো জানিনা।
ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। মরদেহ টি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।