• শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

গাংনীতে বিএডিসির সেচ প্রকল্পে দিশেহারা চাষীরা

এম আর আকাশ: / ১৩০ Time View
Update : সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২
গাংনীতে বিএডিসির সেচ প্রকল্পে দিশেহারা চাষীরা
গাংনীতে বিএডিসির সেচ প্রকল্পে দিশেহারা চাষীরা

মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বিএডিসি ক্ষুদ্র সেচ কর্মকর্তাদের দৌরাত্বে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষীরা। বিভিন্ন অজুহাতে চিহ্নিত দালালদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে যত্রতত্র সেচ পাম্প স্থাপন করায় বিপাকে পড়েছেন প্রকৃত সেচ পাম্প মালিকরা। অপরদিকে অর্থের বিনিময়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রকল্পের সেচ পাম্পের অনুমোদন দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প।
এমন অভিযোগ করে বিএডিসি ক্ষুদ্র সেচের ম্যানেজারগণ ও চাষীরা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে অভিযোগের বিষয়ে কোন সাড়া না পেয়ে আরও বিপাকে রয়েছেন অভিযোগকারীরা। উপরন্ত ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত কর্মকর্তারা আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, এক স্কিমের ভেতর নতুন লাইসেন্স অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে টাকার বিনিময়ে। এতে নতুন অনুমোদন পাওয়া সেচ পাম্প মালিকরা পুরাতন স্কিমের মধ্যে নালা তৈরী করছেন। এতে পুরাতন সেচ পাম্প মালিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। সেচ পাম্পের প্রয়োজন নেই এমন স্থানে সেচ পাম্প অনুমোদন দেওয়ায় পুরাতন ও নতুন মালিকরা জড়িয়ে পড়ছেন বিবাদে। চাষীদের মাঝে চরম বিরোধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোন সময় চাষীরা জড়িয়ে পড়তে পারেন সংঘর্ষে।
এ ছাড়াও বিএডিসি ক্ষুদ্র সেচ গাংনী কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী শ্যামল হোসেন দালাল চক্রের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে লাইসেন্স দিতে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়াও কিউসেক বৃদ্ধিসহ নানা কাজে তিনি উৎকোচ আদায় করে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের মুজিবনগর কৃষি উন্নয়ন সেচ প্রকল্পের আওতায় গাংনী উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদীর সাথে এলএলপি সেচপাম্পসহ বিভিন্ন প্রকার সেচপাম্প স্থাপনের নির্দেশনা রয়েছে। এর আওতায় কাজিপুর থেকে শুরু করে ভোলাডাঙ্গা গ্রাম পর্যন্ত মাথাভাঙ্গা নদীর পানি তুলে সেচ কাজে ব্যবহারের জন্য এলএলপি সেচ পাম্প রয়েছে। গেল বছর পাম্পগুলোর সেচ নালা ও রাইজার নির্মান করা হয়। এই রাইজারের বেশিরভাগ অকেজো হয়ে পড়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মান কাজ করায় কৃষকদের কাছে এখন গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে রাইজারগুলো। গাংনী অফিস এ নির্মানকাজের তদারকি করে কাজ বুঝে নেয়। তাই নিম্নমানের নির্মান সামগ্রীর বিষয়টি শ্যামল হোসেনকে অবগত করলেও তিনি তা এড়িয়ে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে উপসহকারী প্রকৌশলী শ্যামল হোসেন বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের জামানত জমা আছে। কাজ ভাল না হলে জামানত কাটা যাবে। তবে কবে কাটা যাবে ? কিভাবে কাটা যাবে ? এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেননি তিনি।
সেচ ম্যানেজারদের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, হাড়াভাঙ্গা গ্রামের সেচ পাম্প মালিক গোলাম মোস্তফার সেচ পাম্পের পাশে ৫০০ ফুট দূরত্বের মধ্যে লাল্টু মিয়া নামের এক ব্যক্তির নামে সেচ পাম্প অনুমোদন দেন শ্যামল হোসেন। একইভাবে ভোলাডাঙ্গা গ্রামের ওসমান আলীর সেচ পাম্পের ২০০ ফুট দূরে আম্বিয়া খাতুন নামের এক ব্যক্তির সেচ পাম্প অনুমোদন দেওয়া হয়। নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্দিষ্ট দূরত্ব না মেনে এ দুটি সেচ পাম্প অনুমোদন দেওয়া হয়। আম্বিয়া খাতুনের লাইসেন্স বাতিলের জন্য ওসমান আলীর কাছ থেকে ৬০ হাজার ঘুষ নেন শ্যামল হোসেন। যা লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শ্যামল হোসেন তার পছন্দের লোকজনের মাধ্যমে কৃষকদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে সেচ পাম্প অনুমোদন ও স্থাপন করাচ্ছেন। এতে চলমান সেচ পাম্পের আওতাধীন কৃষকরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
তবে এ অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন উপসহকারী প্রকৌশলী শ্যামল হোসেন। তিনি বলেন, নিয়ম মেনেই সব করা হচ্ছে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে পৃথক অভিযোগে দেওয়া হচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম থেকে রেহাই মিলবে এমন প্রত্যাশা ভুক্তভোগীদের।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
error: Content is protected !!