পঞ্চম শ্রেনীর গন্ডি না পেরুলেও ব্যাংকে চাকরী ও লোন করে দেয়ার নাম করে ৬২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে চিহ্নিত প্রতারক মিলনকে আটক করেছে পুলিশ। সোনালী ব্যাংকে চাকরী দেয়া ও একই ব্যাংকে লাখ লাখ টাকা লোন করে দেয়ার নাম করে এই বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয় মিলন। কমপক্ষে ১৮ জন মিলনের শিকারে পরিনত হয়ে স্বর্বশান্ত হয়েছেন। একের পর এক ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগে অবশেষে মিলনকে গতকাল বিকেলে আটক করে পুলিশ। আলমডাঙ্গা অঞ্চলের চিহ্নিত প্রতারক মিলন ডাউকি ইউনিয়নের মাজু গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে।
প্রতারনার শিকার বক্সিপুর গ্রামের রনি জানান, সোনালী ব্যাংকের কোন এক ডিজিএম মিলনের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে প্রথমে তার কাছ থেকে ৯ লক্ষ নেয়। চাকরী পেতে রনির সাথে মিলনের চুক্তি হয় ১৮ লাখ টাকায়। এই সমপরিমান টাকার লোন করে দেয়ার নামে পরে আরো ৩ লাখ টাকা নেয় মিলন। বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে রনিকে কুষ্টিয়ার সোনালী ব্যাংকের শাখায়ও নিয়ে যায় সে। পরবর্তিতে চাকরী ও লোন কিছুই হয়নি রনির। মিলন টাকা হাতিয়ে নিয়ে গ্রাম থেকে উধাও হয়ে যায়। পরে ১২ লাখ টাকা ফিরে পেতে মিলনের পেছনে দীর্ঘ সাত মাস ধরে পাগলের মত ঘুরেছেন রনি। অবশেষে বাধ্য হয়ে মিলনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। একইভাবে চাতাল মোড়ের রশিদুলকে ব্যাংক থেকে ৮০ লাখ টাকা লোন করিয়ে দেয়ার নামে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সোনালী ব্যাং থেকে লোন করে দেয়ার নামে রামদিয়ার ইমরান হোসেনের কাছ থেকেও মিলন টাকা হাতিয়ে নেয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতারক মিলন ব্যাংক ছাড়াও বিদেশে লোক পাঠানোরও জাল ফেলে। মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে গোবিন্দপুর গ্রামের মনোয়ারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় ৪ লাখ টাকা। মাসের পর মাস চাকরী ও লোন না পেয়ে এবং বিদেশে যেতে না পেরে প্রতারিতরা একজোট হয়ে মিলনের নামে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ কিছুদিন ধরে মিলনকে আটকের চেষ্টা করছিল। কিন্ত মিলন ছিল লাপাত্তা। অবশেষে বাড়ি এসেছে সংবাদ পেয়ে থানার এএসআই জালাল উদ্দিন গতকাল বিকেলে মাজু গ্রাম থেকে মিলনকে আটক করেন। আটকের সংবাদ পেয়ে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই পাওনাদারেরা থানার সামনে ভীড় করতে থাকেন।
এ ব্যাপারে থানার ওসি তদন্ত আলিম উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়ে বেশ কিছুদিন ধরে মিলনকে আটকের চেষ্টা করছিল পুলিশ। অবশেষে তাকে আটক করা হয়েছে।