কাউন্সিল না দিয়েই নিজেদের মন মতো সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগ। আবশেষে মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের কাউন্সিলের গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সেই সাথে শুরু হয়েছে ছাত্র নেতাদের দৌড়ঝাপ। তবে ছাত্রলীগের পদ বাগাতে পিছিয়ে নেই বিবাহিত ছাত্র নেতারাও। জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মুনতাসির জামান মৃদুলসহ অনেকেই ঢাকায় ছিলেন এবং এখনো কেউ কেউ অবস্থান করছেন। জেলা কমিটির দ্বায়িত্ব নিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাথে যোগাযোগ করে যেনো ঢাকা থেকেই কমিটি করা যায় সেই কৌশলও অবলম্বন করছেন অনেকেই।
জেলা ছাত্রলীগ সুত্রে জানাগেছে, জেলা ছাত্রলীগের মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগেই। কিন্তু বিশেষ কিছু কারনেই দীর্ঘদিন কউিন্সিল দেওয়া সম্ভব হয়নি। এবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাউন্সিলের আগেই যে কোন সময় জেলা ছাত্রলীগের কাউন্সিল হয়ে যাবে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা কর্মী হিসেবে কাজ করছেন বা পদ পাওয়ার প্রত্যাশায় নেতাদের সঙ্গে ঘুরেছেন তাঁদের মধ্যে দেখা দিয়েছে স্বস্তি। এই কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে মেহেরপুর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলা ছাত্র নেতারাও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ দখলে নিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাথেও যোগাযোগ করছে নিয়মিত। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের মদদেই কয়েকজন বিবাহিত ছাত্র নেতারা উপজেলা ছাত্রলীগের পদ পেয়েছে। তাই তারা এখন জেলা কমিটিতে সভাপতি সম্পাদকের পদের জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। এই বিবাহিতরা পদে আসলে জেলা ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে ভেঙ্গে পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, দুই বছর আগে মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। মুজিবনগর ও মেহেরপুর পৌর ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদও নেই। চলতি বছরে গাংনী সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ও গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টু, সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক দুজনেই বিবাহিত। শুধু দুজনই না আরো অনেকেই বিবাহিত এবং সভাপতি সম্পাদকের স্ত্রীরাও রয়েছে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে। এছাড়া গঠনতন্ত্র পরিপন্থি হলেও বির্তকিত ভাবে পদের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এ কমিটি গঠনের পরে কলেজ ছাত্রলীগের একটি কর্মসূচী ছাড়া কোন অনুষ্ঠানেই সভাপতির সাথে সম্পাদককে দেখায় যায়নি। ১৫ই আগস্টের মতো জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচীতেও সাধারণ সম্পদকের দেখা মেলেনা উপজেলা ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে।
বর্তমানে জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতি বা সম্পাদক পদ নিতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মুনতাসির জামান মৃদুল। সহ-সভাপতি আদিব হাসান আসিফ, ছাত্রলীগ নেতা মহিবুল ইসলাম তনয়, আবু মোর্শেদ শোভন, মেহেরপুর সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ, গাংনী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুল ইসলাম মোহন। এছাড়াও গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক ও গাংনী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হাবিব এই দুজনেই বিবাহিত।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনতাসির জামান মৃদুল বলেন, যে কোন সময় মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। অনেকেই যোগাযোগ করছে কেন্দ্রে তবে সবার তথ্যই কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি দেওয়া হয় দলকে বেগবান করার জন্য। কমিটিতে যদি বিবাহিতরা দ্বায়িত্বে আসে তাহলে তাদের পারিবারিক পিছু টানে সংগঠন বেগবান হওয়া দুরের কথা দলের কার্যক্রম ব্যহত হবে। আগামী দিন গুলোতে ছাত্রলীগকে অগ্রনী ভুমিকা পালন করতে হবে সে বিবেচনায় কেন্দ্রীয় নেতারা অবশ্যই যোগ্যদের নিয়ে কমিটি উপহার দিবে বলে আশাবাদি।