আলমডাঙ্গার মাদ্রাসা পাড়ায় বসত-বাড়িতে দিনে-দুপুরে স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনায় ১৮ ঘন্টায় চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (৬নভেম্বর) দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া জেলার চৌঁড়হাস এলাকার ক্যানেলপাড়া থেকে স্বর্ণালংকার উদ্ধার ও চুরির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় মা- মেয়েসহ কুষ্টিয়ার এক জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় স্বর্ণালঙ্কার চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আটকৃতরা হলো- কুষ্টিয়া শহরের চৌঁড়হাস ক্যানেলপাড়ার আবুল হোসেনের স্ত্রী জাহানারা খাতুন (৬৫) , তার মেয়ে রেজাউল করিমের স্ত্রী পলি খাতুন (৩৮) ও একই এলাকার সোহাগ জুয়েলারির মালিক সোহাগ (৩৮)।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুর মাদ্রাসা পাড়ায় সানোয়ার হোসেন ও স্ত্রী-জবেদা খাতুন তার ছেলের বউ বসবাস করে। গত (৬ নভেম্বর) দুপুরের দিকে সানোয়ার হোসেনের স্ত্রী জবেদা খাতুন বাড়ির পাশে কাপড় পরিস্কার করছিলো। তার ঘরে মেইন গেইট খোলা দেখে কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস এলাকার আবুল হোসেনের স্ত্রী জাহানারা খাতুন বাড়িতে প্রবেশ করে। সুযোগ বুঝে সে ওয়ারড্রব খুলে বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নেয়।
পরে জবেদা খাতুন কাপড় পরিস্কার করে ঘরে ঢুকতে জাহানারাকে দেখতে পায়। সে পানি খাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়িতে প্রবেশ করেছে বলে জানালে জবেদা খাতুন কিছু না বুঝেই তার জন্য পানি আনতে গেলে সে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি সন্দেহ হলে সে ওয়ারড্রব খুলে দেখে তার ও ছেলের বউ এর সকল স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে গেছে।
এমন ঘটনায় জবেদা খাতুন ঘটনাটি পুলিশকে জানায়। পুলিশ ইতোপূর্বে আটক হওয়া জাহানারার ছবি দেখালে সে চোর নিশ্চিত করে। এ ঘটনায় তিনি আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ কুষ্টিয়া জেলার চৌঁড়হাস মোড়ে স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। মধ্য রাতে পুলিশ দেখে জাহানারা খাতুন চুরির ঘটনা উন্মোচন করে।
জাহানারা খাতুন জানায়, স্বর্ণের দেড় ভরি ওজনের একটি চেইন ৪৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কুষ্টিয়া শহরের চৌঁড়হাস মোড়ে সোহাগ জুয়েলারিতে বিক্রি করে। এছাড়াও চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার ও বিক্রির ৪৫ হাজার টাকা তার মেয়ে রেজাউল করিমের স্ত্রী পলি খাতুনের নিকট রয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে স্বর্ণালঙ্কার চুরির সাথে সম্পৃক্ত ৩ জনকে আটক করে। উদ্ধার করা হয় প্রায় ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার।
এ ঘটনায় কুষ্টিয়া জেলার জুয়েলারি মালিক সমিতির সভাপতি মিজান কুমার কর্মকার জানান, চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার ক্রয় করতে সঠিক দোকানের রশিদ ও জাতীয় পরিচয়ের মাধ্যমে ক্রয় করতে হবে। তবে, চুরি সিন্ডিকেট এর সাথে সম্পৃক্ততা রেখে ব্যবসা পুরো বে-আইনি।
তিনি আরো জানান, যদি সোহাগ জুয়েলারির মালিক সোহাগ যদি চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার চুরির প্রমান মিলে।পরবর্তীতে ব্যবসায়ীক সমিতি তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবে।
স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, চুরির ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। চুরি হওয়া প্রায় ৭ ভরি স্বর্ণের গহণা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।