কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় ফকির লালন শাহের আখড়া বাড়িতে শেষ হচ্ছে সাধু সঙ্গ। যদি তরিতে বাসনা থাকে ধরো রে মন সাধু সঙ্গ ভজো রে মন আনন্দের গৌরাঙ্গ। এই গানের মতোই আনন্দের গৌরাঙ্গ খুঁজতে সাধু সঙ্গে মিলিত হয় হাজার হাজার বাউল। আর বাউলদের সাধু সঙ্গ দেখতে সারা দেশ থেকে লাখো মানুষ জমা হয় কুষ্টিয়া কুমারখালী ছেঁউডিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের আখড়া বাড়িতে।
আর লাখো মানুষের আনন্দের খোরাক জোগান দুই বাংলার শিল্পীরা। মঞ্চে শুরু হয় মর্মবানী সম্পূর্ণ লালন গান। সাইজীর ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে লালন আখড়া বাড়িতে ১৭ অক্টোবর সাধু সঙ্গের উদ্ধোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুষ্টিয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহাবুব-উল আলম হানিফ।
লাখো ভক্ত অনুরাগীর সামনে প্রথমে লালন একাডেমির শিল্পীর দলীয় গানের মধ্যে দিয়ে উদ্ধোধনী সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর ওপার বাংলা ভারতের শিল্পীরা গান করেন। পর পর তিনটি লালনের দৈন্য গান পরিবেশন করে লালনের তিরোধানের শোকার্ত আবহ তৈরী করেন ভারতীয় শিল্পীরা। এরপর থেকে সারারাত শিল্পীরা লাখো জনতার সামনে লালন সংগীত পরিবেশন করেন।
এদিকে বাউলদের সাধু সঙ্গে দেখা মিলেছে বহু বিদেশীর। বাউল সম্রাট ফকির লালনের তিরোধানের দিন সন্ধ্যায় গোষ্ঠ গানের মধ্য দিয়ে সাধু সঙ্গ শুরু করেন। পরের দিন দুপুরে পূর্নসেবার মধ্য দিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ করেন। আর সাধু সঙ্গকে কেন্দ্র করে শুরু হয় লালন গানের মহোৎসব। তিনদিন সারারাত চলে লালন গান।
প্রথমদিন লালনের মুল মঞ্চে বাংলাদেশের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী শফি মন্ডল’সহ লালন একাডেমি শিল্পী ও ভারতের শিল্পীরা গান পরিবেশন করে মাতিয়ে তোলেন ভক্তদের। এই ভাবে শেষ হয় তিন দিনের তিরোধানের অনুষ্ঠান।
এবারের লালন শাহের ১৩২ তম তিরোধান দিবস-২২ আয়োজনে মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইজির অমর বানী ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ প্রতিপাদ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং লালন একাডেমির আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এ লালন তিরোধান দিবসের আয়োজন করা হয়েছিলো।
এবারের লালনের তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান শতভাগ সফল বলে মনে করছেন লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।