কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রী (১২) কে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শিক্ষকের নাম মো. আব্দুল হালিম (৪০)। তিনি উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং কয়া ইউনিয়নের খলিশাদহ গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।
মঙ্গলবার সকালে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গত ২০ সেপ্টেম্বর আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করায় বিভাগীয় উপপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগ কর্তৃক কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ আব্দুল হালিম কে ২০ সেপ্টেম্বর হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় । গত সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি হস্তগত হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘ যতদিন মামলা চলমান থাকবে, ততদিন এই শিক্ষক বরখাস্ত থাকবেন। বরখাস্তের এই সময়টুকু তিনি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে হাজিরা দিবেন।
পুলিশ ও মামলার বাদী সুত্রে জানা গেছে, ‘ টিসি দেওয়ার ভয় দেখিয়ে লম্পট প্রধান শিক্ষক একাধিকবার মেয়েকে যৌনপীড়ন করেছেন। সর্বশেষ গত ২৩ আগষ্ট দুপুরে বিদ্যালয়ের স্টোর রুমে নিয়ে শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানি করে। ওইদিন বাড়িতে এসে মেয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং কাঁন্নাকাটি শুরু করে। জানতে চাইলে মেয়েটি বিস্তারিত জানায় পরিবারের কাছে। পরে গত ২ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কুমারখালী থানায় মামলা করেছেন ওই ছাত্রীর মা। মামলা নম্বর ৪।
এবিষয়ে মামলার বাদী ও শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘ লম্পট শিক্ষক আমার মেয়ের সাথে একাধিকবার খারাপ কাজ করেছে। থানায় মামলা করেছি। মামলা চলমান। এমন প্রধান শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই আমি। ঘটনার পর থেকে মেয়ে ভয়ে আর স্কুলে যায়না।’
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামান বলেন, ‘ ঘটনা জানাজানির পর গত ২৯ আগষ্ট থেকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেনি। ওই ছাত্রীও আসেনা। প্রধান শিক্ষক দোষী হলে তাঁর শাস্তি কামনা করি।’
এবিষয়ে বক্তব্য নিতে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমের মুঠোফোনে বারবার কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কলটি রিসিভ করেননি। পরে তাঁর স্ত্রী ও উত্তর মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহাকারী শিক্ষক বিলকিস খাতুন মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনিও কল ধরেননি।
কুমারখালী থানার উপ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লিটন দাস বলেন, শিক্ষার্থী জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্তে জবানবন্দির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আগামী ১৫ অক্টোরব তারিখের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।