• শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪০ অপরাহ্ন

নিজের শরীরের রক্ত ছিটিয়েই নিখোঁজ আশা কর্মচারি হৃদয়?

বিবর্তন প্রতিবেদক / ৫০০ Time View
Update : বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২
নিজের শরীরের রক্ত ছিটিয়েই নিখোঁজ আশা কর্মচারি হৃদয়?
নিজের শরীরের রক্ত ছিটিয়েই নিখোঁজ আশা কর্মচারি হৃদয়?

সম্প্রতি গাংনীর বাওট বাজারে আশা এনজিও অফিসের কর্মচারী হৃদয় নিখোঁজের রহস্য উম্মোচনের দ্বারপ্রান্তে। খুন করে গুম করার অভিযোগে শাখা ব্যবস্থাপককে গণপিটুনি দিয়ে দেওয়া হয়েছিলো পুলিশে। কিন্তু এই ঘটনার আগের দিন হৃদয় স্বশরীরে বামন্দীর একটি ডায়গনস্টিক থেকে এক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেছিলেন।

সেই রক্ত তার আত্মীয় কিংবা পরিবারের কাউকে দেওয়া হয়নি। রাতে সেই রক্ত অফিসে ছিটিয়েই হত্যা শেষে গুম করা হয়েছে বলে প্রমাণের চেষ্টা করেছে হৃদয়? এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজছে পুলিশ। অপরদিকে আশা ম্যানেজারকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবিও বেশ জোরালো হচ্ছে।

গত ২ অক্টোবর সকালে আশা এনজিওর বাওট শাখা অফিসের মধ্যে রক্তের ছাপ ও রক্ত মাখা বটি দেখে হৃদয়কে হত্যা ও গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার পরিবার। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অতি উৎসাহি কিছু স্থানীয় মানুষ শাখা ব্যবস্থাপক আমিনুলকে গণধোলাই দেয়। মুমূর্ষ অবস্থায় ম্যানেজারকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হৃদয় নিখোঁজের রহস্য সৃষ্টির আগের দিন বামন্দীর হৃদয় ডায়গনস্টিক সেন্টারে গিয়ে নিজের শরীর থেকে এক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে আশা কর্মচারী হৃদয়। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি তার বড় বোনের জন্য রক্ত পাঠাতে হবে বলে দাবি করেছিলেন নিখোঁজ হওয়া হৃদয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারের টেকনোলজিস্ট জাহিদ হাসান রাজা বলেন, বাওট আশা অফিসের হৃদয় ঘটনার আগের দিন সকালে হৃদয় আমাদের প্রতিষ্ঠানে আসে। সাথে রক্তের ব্যাগ ও সিরিঞ্জ ছিল। তার বড় বোনের জন্য মেহেরপুর সদর হাসপাতালে রক্ত পাঠাতে হবে দাবি করে এক ব্যাগ রক্ত টেনে দিতে বলে। তার শরীর থেকে রক্ত টানা হয়। হৃদয় সেই রক্তের ব্যাগ নিয়ে ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।

এলাকার বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, বাওট আশা অফিসের সেদিনের ঘটনার পর থেকেই নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে। সকালে হৃদয়ের পরিবারের লোকজন কান্নাকাটি করতে করতে অফিসে আসে। অফিসের ভিতরে রক্তের ছাপ ও রক্তমাখা বটি দেখা যায়। কিন্তু অফিসে কোন মরদেহ বা জখম কোন ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যায় হৃদয় বাড়ি থেকে নিখোঁজ। আবার অফিসের চাবি হৃদয়ের কাছেও রয়েছে এক সেট। তাহলে হৃদয় যেকোন সময় অফিসে প্রবেশ করতে পারে এটাই স্বাভাবিক। তাহলে বামন্দীর ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিজের শরীর থেকে যে রক্ত সংগ্রহ করেছিল তা ই কি ছিটানো হয়েছিল আশা অফিসে? এমন প্রশ্ন এখন এলাকার মানুষের মাঝে বেশ আলোচনা হচ্ছে।

অপরদিকে আশা অফিসের শাখা ব্যভস্থাপককে গণধোলাই একটি পরিকল্পিত ঘটনা বলেও এখন মনে করছেন এলাকার অনেকে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে বিষয়টি তাদের কাছে আরও স্পষ্ট হচ্ছে। হৃদয় নিখোঁজের সাথে ম্যানেজার জড়িত কি না তা নিশ্চিত হওয়ার আগেই তাকে দেওয়া হলো গণপিটুনি। আবার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগও করা হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে রয়েই গেছে গভীর রহস্য।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, নিখোঁজ হৃদয়কে খুঁজে বের করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশের একাধিক টিম এ কাজে ব্যস্ত রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
error: Content is protected !!