• বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৮ অপরাহ্ন

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সারা বিশ্বের নারীদের কাছে অনুকরণীয়..প্রধানমন্ত্রী

বিবর্তন ডেস্ক / ২০৭ Time View
Update : রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সারা বিশ্বের নারীদের কাছে অনুকরণীয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও তার মেয়ে শেখ হাসিনা।

‘বঙ্গমাতা: এ প্যারাগন অফ উইমেন লিডারশিপ অ্যান্ড ন্যাশন বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রোববার এ মন্তব্য করেন সরকার প্রধান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের উদ্যোগে সম্মেলনটি শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের নারীদের কাছে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অনুকরণীয়। তিনি যেমন দেশ ও মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামে সমর্থন ও সহযোগিতা করেছেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর তিনি জীবন ভিক্ষা চাননি; বরং অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এমন একজন মানুষ, যিনি তার জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছেন একটি জাতির স্বাধীনতার জন্য; একটি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য।

বঙ্গমাতার অবদানগুলো আলোচনায় কম এসেছে উল্লেখ করে তার মেয়ে বলেন, ‍দেশ ও দেশের মানুষের জন্য আমার মায়ের যে আত্মত্যাগ, তা খুব কমই উঠে এসেছে। দেশের স্বাধীনতার জন্য আমার বাবার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের সারথি ছিলেন আমার মা।

সব সময় আমার মা সাহস জুগিয়েছেন। আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য বাবা বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকলেও কখনোই বিরক্ত করতেন না। বলতেন, ‘আমি দেখব, তুমি চিন্তা করো না’।

সংসার সামলানোর পাশাপাশি জাতির পিতার অনেক সময়োচিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতার পরামর্শ আন্দোলন-সংগ্রামে গতির সঞ্চার করেছিল বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমার মা খুনিদের কাছে নিজের জীবন ভিক্ষা চান নাই। তিনি নিজে জীবন দিয়ে গেছেন। জাতির পিতার সিঁড়িতে পড়ে থাকা মৃতদেহ দেখে সোজা বলে দিয়েছেন, ‘তোমরা উনাকে মেরেছ, আমাকেও মেরে ফেল।’ সেখানেই আমার মাকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে।

বঙ্গমাতা নির্মোহ জীবন যাপন করতেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমার মায়ের কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। দেশের জন্য, মানুষের জন্য, দলের জন্য তিনি সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। পৃথিবীর যেকোনো মেয়ে তা অনুসরণ করতে পারবে।’

১৫ আগস্ট পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বঙ্গমাতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ঘাতকের বুলেট তাকে কেড়ে নেয়। সংসারের ব্যাপারে, রাজনীতির ব্যাপারে, প্রতিটি ব্যাপারে ‍তিনি যখন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেটা যে আমাদের দেশের জন্য কত সঠিক ছিল, আর শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের জীবনটাও দিয়ে গেলেন।’

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দিতে চাইলেও বঙ্গমাতা রাজি হননি বলে অনুষ্ঠানে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মা আমাকে একটা চিঠি দিয়ে পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু আমি চিঠিটা দিতে পারিনি, তবে বাবাকে মার মতামত মুখে জানিয়ে জানাই যে, তিনি বলেছেন, প্যারোলে মুক্তির দরকার নেই।

‘এ দেশের মানুষের জন্য তিনি এমনিতেই মুক্ত হবেন। প্যারোলে নয়; তিনি সসম্মানে মুক্তি পাবেন।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গমাতা সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং বঙ্গমাতার অবদান নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার মায়ের প্রতি যে সম্মান দেখিয়েছে, তার জন্য আমি গর্ববোধ করি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কৃতজ্ঞ।’

তিনি বলেন, ‘মাতৃভাষা থেকে শুরু করে দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার পর দেশ গঠন এবং সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাবি মুখ্য ভূমিকা পালন করছে।

‘আজ আমরা যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, তারও সবচেয়ে বড় অবদান এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাই আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে গর্ববোধ করি। আমাদের পরিবারের প্রায় সবাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
error: Content is protected !!